মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি: সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রতি শরতে মর্ত্যে বাবার বাড়ি আসেন দশভূজা দেবী দুর্গা; তাই আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন দুর্গোৎসব।
ষষ্ঠী তিথিতে বেলতলায় দেবীর অধিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে বুধবার। এরইমধ্যে ঢাকের বাদ্য আর শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রতি শরতে ‘কন্যারূপে’ মর্ত্যলোকে বাবার বাড়ি আসেন দশভূজা দেবী দুর্গা; বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তাকে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয়। তার এই ‘আগমন ও প্রস্থানের’ মাঝে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন চলে দুর্গোৎসব।
মহালয়ার মধ্য দিয়ে গত ২ অক্টোবর শুরু হয়েছে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হয়েছে বোধন, অর্থাৎ দেবীর ঘুম ভাঙানোর বন্দনা পূজা।
বুধবার মহাষষ্ঠী, বৃহস্পতিবার মহাসপ্তমী, শুক্রবার মহাঅষ্টমী আর শনিবার হবে মহানবমীর পূজা। পঞ্জিকা মতে এবার নবমী পূজার পরই দশমীর বিহিত পূজা হবে। তবে বিজয়া দশমী উদযাপন হবে রোববার। ওইদিন বিকালে প্রতিমা বিসর্জনের আগে হবে বিজয়ার শোভাযাত্রা।
কক্সবাজারে দুর্গোৎসব উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার কথা জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব বলছে, কক্সবাজারে ঝুঁকিপূর্ণ কোনও পূজামণ্ডপ নেই। তারপরও মণ্ডপে মণ্ডপে বাড়ানো হয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের টহল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষও।
মঙ্গলবার বিকালে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করে এসব কথা জানান র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, কক্সবাজারে ঝুঁকিপূর্ণ কোনও পূজামণ্ডপ নেই। তবে গুজবকে কেন্দ্র করে কেউ যেন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
যেকোনও ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি মিলেমিশে কাজ করছে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্ন করতেও সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ জানায়, এ বছর কক্সবাজারে ৩২১টি দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫১টি প্রতিমা পূজা ও ১৭০টি ঘট পুজা।