মোঃ বাদল হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি।। জমি, দোকানঘর এবং আর্থিক লেনদেন নিয়ে সৃষ্ট বিবাদ মেটাতে একের পর এক অপহরণ মামলা দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় দু’বছর যাবত ধরে চলতে থাকা এঘটনাটি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা শহরের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, মির্জাগঞ্জ মরহুম হযরত ইয়ারউদ্দীন খলিফার মাজারের সন্নিকটের বাসিন্দা মোঃ মজিবর মল্লিক গং এবং একই এলাকার প্রতিবেশি মোঃ জব্বার খানের সাথে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিলো। সেই শত্রুতার জের ধরে মোঃ জব্বার খানের দ্বিতীয় স্ত্রী ময়না খানমকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ করে একের পর এক অপহরণ, গুম এবং লুটের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে প্রতিপক্ষ মজিবর মল্লিক ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের। সাজানো মামলায় আসামি হয়ে হয়রানী থেকে রেহাই পাচ্ছেন না নারীরাও। এছাড়া উল্লেখিত সাজানো মামলায় যাদের সাক্ষী করা হচ্ছে তারাও নানাভাবে নাজেহাল হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, বিরোধের জেরে ২০২০ সালে মোঃ জব্বার খানের দ্বিতীয় স্ত্রী ময়না খানমকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে আজগুবি গল্পকাহিনী উল্লেখ করে একটি মামলা করা হয়। জব্বার খান নিজে বাদী হয়ে এ অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মোঃ মজিবর মল্লিক, মোঃ রফিক মাঝি, মোঃ মামুন মল্লিক, মোসাঃ মিনারা বেগম, মোঃ সামসূ এবং মোঃ সাগর সহ অজ্ঞাতনামা৪/৫জনকে আসামি করা হয়। প্রায় দুই বছর পর আদালত ওই মামলা খারিজ করে দেন।
ভুক্তভোগীদের দেয়া তথ্যমতে, জিআর মামলা নং ৮২/২০২০ এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের ৭৫/২০২১ নং মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পরপরই একই কল্পকাহিনী উল্লেখ করে ধারাবাহিকভাবে আরো ২টি অপহরণ মামলা দেয়া হয়। এসব মামলায় একই ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। ওই মামলাগুলো থেকেও অব্যাহতি দেয় আদালত।
সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট স্ত্রী ময়না খানমকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে একই ধরণের আাজগুবি গল্পকাহিনী উল্লেখ করে অপহরণ, গুম, মুক্তিপণ দাবি এবং লুটের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন জব্বার খান। ওই মামলায়-ও মোঃ মজিবর মল্লিক, মোঃ রফিক মাঝি, মোঃ মামুন মল্লিক, মোসাঃ মিনারা বেগম, মোঃ সামসূ এবং মোঃ সাগর সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া সাক্ষীর তালিকায়-ও একই ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ওই মামলায় উল্লেখিত সাক্ষী মোঃ আলী আকবর, মোঃ সেলিম গাজী, মোঃ সুলতান গাজী ও মোঃ সজিব গাজী বলেন, তারা মামলায় উল্লেখিত বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানেন না। সাজানো মিথ্যা মামলায় সাক্ষী হিসেবে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বারবার অনৈতিকভাবে তাদের নাম সাক্ষীর তালিকায় উল্লেখ করায় তারা শুধু শুধু হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এছাড়া সামাজিকভাবে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়ায় এখন তারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। তারা এই মামলাবাজের কবল থেকে রক্ষা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
মামলাবাজের অত্যাচারের শিকার মজিবর মল্লিক জানান, জব্বার খান প্রথমে আমার স্টল (দোকানঘর) ভাড়া নেন। কিছুদিন পর সেই স্টল ছাড়াও পাশের আরেকটি স্টলের মালিকানা দাবি করে বিরোধ সৃষ্টি করেন। এর ধারাবাহিকতায় শত্রুতার জেরে একের পর এক সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছেন তিনি।
এবিষয়ে জব্বার খানের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘না ঠেকলে কেউ মামলা দেয়? অনেক ঠেকে গিয়ে মামলা দিতে বাধ্য হয়েছি। আমার জমি, স্টল বুঝে পাওয়ার জন্য অনেকের ধারে ধারে ঘুরেছি, অনুরোধ করেছি কিন্তু কেউই সমাধান দেননি। এরপর সমস্যা সমাধানের জন্য বাধ্য হয়ে অপহরণ মামলা দিয়েছি।