গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের টঙ্গীতে ১১ বছরের ছেলেকে গলাটিপে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকার কাশবন থেকে ওই শিশুটির লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
নিহত ওই শিশুটির নাম আব্দুর রহমান মুছা(১১)। এ ঘটনায় জড়িত শিশুটির বাবা মহিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মহিউদ্দিন মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার দত্তপাড়া ডুয়াটি গ্রামের সিরাজ মাতবদের ছেলে।
গত শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিখোঁজ ছেলের সন্ধান চেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় সাধারণ ডায়রি করেন মুছার মা শরিফুন নেছা। তারপর থেকেই পুলিশের একটি দল শিশুটির সন্ধানে নামেন।
নিহত মুছা টঙ্গীর গোপালপুর এলাকায় জনৈক পান্নু খানের ভাড়া বাড়িতে মায়ের সাথে বাস করত। মুছা ওই এলাকার হলি ক্রিসেন্ট হাই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীতে লেখাপড়া করত।
পরিবারের বারত দিয়ে পুলিশ জানায়, প্রায় ষোল বছর আগে পারিবারিক ভাবেই বিয়ে হয় মহিউদ্দিন ও শরিফুন নেছার। পরে তাদের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। পারিবারিক টানাপোড়েন মহিউদ্দিন প্রবাসে পাড়ি জমান। প্রায় নয় বছরের পর মহিউদ্দিন দেশে ফিরে প্রথম বিয়ে ও সন্তানের তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় বিয়ে করেন ফরিদপুর জেলার ভাঙা থানার বাউনকান্দা গ্রামের সুমনা আক্তারকে। কয়েক মাসপর দ্বিতীয় স্ত্রী সুমনা মহিউদ্দিনের প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের তথ্য জেনে যায়। এতে কলহে জড়ান তাঁরা।
গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ছেলে মুছাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেড়িয়ে যান বাবা মহিউদ্দিন। কিছুক্ষণ পর রাজধানীর তুরাগ এলাকার একটি কাশবনে নিয়ে যায় শিশুটিকে।পরে সেখানে তাকে গলাটিপে হত্যা করে কাশবনের ভেতরে লাশটি ফেলে বাসায় চলে আসেন তিনি। বাসায় ফিরে মুছা হারিয়ে গেলে বসে সকলকে জানিয়ে দেয়। এরই এক পর্যায়ে মহিউদ্দিন ওই বাসা ছেলে চলে আসেন।
সাধারন ডায়রির সূত্র ধরে মঙ্গলবার রাতে শিশুটির সন্ধান করতে গিয়ে পুলিশ বাবা মহিউদ্দিনকে ফরিদপুর জেলার থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছেলে মুসাকে গলাটিপে হত্যার পর কাশবনে ফেলে দেয়ার তথ্য জানায় মহিউদ্দিন। ঘটনার পাঁচদিন পর বুধবার মহিউদ্দিনের দেয়া তথ্যে রাজধানী তুরাগের একটি কাশবন থেকে শিশু মুছার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের উপ-পুলিশ কমিশনার আলমগীর হোসেন দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।