পটুয়াখালী প্রতিনিধি।। মির্জাগঞ্জ হযরত ইয়ারউদ্দীন খলিফা (রঃ) মাজার ওয়াকফ্ স্টেটের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম ফয়সাল, হিসাবরক্ষক সোহাগ মল্লিক, দানবাক্সের আদায়কারী আল আমিন পিওন, জাকির মোল্লা ও ফোরকান মাঝি’র বিরুদ্ধে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জেলার গলাচিপা পৌর এলাকার বাসিন্দা ইকবাল শরীফের মেয়ে তিন শিশু সন্তানের মা বিধবা সুমি (৩২) এ অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ‘ভুক্তভোগী সুমি’র স্বামী মৃত মোঃ হেলাল মাতুব্বর মির্জাগঞ্জ ইয়ারউদ্দীন খলিফা (রঃ) মাজারের দানবাক্সের আদায়কারীর দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি ২০২২ সালে মৃত্যুবরণ করার পর মাজারের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম ফয়সাল, হিসাবরক্ষক মোঃ সোহাগ মল্লিক, মাজারের আদায়কারী আল আমিন পিওন, জাকির মোল্লা ও ফোরকান মাঝি পরস্পর যোগসাজশে তার স্বামীর ব্যক্তিগত টাকায় বানানো ৬শতাধিক দানবাক্স এবং ওই দানবাক্সের তালা, শিকল ও দানবাক্সের টাকা আত্মসাৎ করে সুমি কে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র শুরু করেন।’
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়- ‘মাজারের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ১৪ ডিসেম্বর জাল স্বাক্ষর সম্বলিত ১০০টি দানবাক্সের একটি বন্ধকী চুক্তিনামা এবং ২০২২ সালের ৮ জানুয়ারি ২০০টি দানবাক্সের বিক্রয় চুক্তিনামার ফটোকপি দেখিয়ে অভিযোগকারী সুমি’র কাছে ৩লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। বন্ধকী চুক্তিনামা দেখিয়ে ১লক্ষ টাকা এবং বিক্রয় চুক্তিনামা দেখিয়ে ২ লক্ষ ৩০ হাজার মিলিয়ে মোট ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়।’
অভিযোগ সূত্রমতে, ‘তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অপারগ হওয়ায় ২০২৪ সালের ১০ জুলাই সুমি কে মাজারের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম ফয়সাল স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ দেয়া হয়। ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়- ‘২ লক্ষ ৩৩ হাজার ৩৭৩ টাকা’ ১ সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা সহ আদায়কারীর পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে।
ভুুক্তভোগী সুমি অভিযোগে উল্লেখ করেন- ‘তার স্বামী মৃত মোঃ হেলাল মাতুব্বর মাজারের দানবাক্সের আদায়কারী ছিলেন। কিন্তু তিনি মাজারের দানবাক্সের আদায়কারী কিংবা অন্য কোনো পদে কোনোদিন দায়িত্ব পালন করেননি। তবু তাকে বিশেষ স্বার্থে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।’
সুমি’র দাবি, ‘এবিষয়ে প্রতিকার পাওয়ার জন্য মির্জাগঞ্জ ইয়ারউদ্দীন খলিফার (রঃ) মাজারের সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম ফয়সাল ও মাজারের হিসাবরক্ষক মোঃ সোহাগ মল্লিকের নিকট বারবার অনুনয়-বিনয় করেছেন। কিন্তু তারা কোনো সুরাহার ব্যবস্থা না করে উল্টো তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেছেন। এছাড়া তার ব্যক্তিগত নারীচরিত্র নিয়ে প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে বিভিন্ন ধরণের কুকথা বলে নাজেহাল করা হয় তাকে।’
এবিষয়ে ভুক্তভোগী অসহায় সুমি জানান- ‘অনেকের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়েও উপায় মেলেনি। তাই সমস্যার সুষ্ঠু সুরাহার জন্য নিরুপায় হয়ে জেলা প্রশাসকের শরণাপন্ন হয়েছেন তিনি।
সমস্যার সমাধান সহ প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে চাঁদাবাজীর ফাঁদ তৈরি এবং নারী হিসেবে তাকে বিভিন্নভাবে নাজেহাল করার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিন শিশু সন্তানের মা অসহায় বিধবা সুমি।’
উল্লেখ্য, ‘ ওয়াকফ্ প্রশাসক, মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা ও মির্জাগঞ্জ ইয়ারউদ্দীন খলিফা (রঃ) মাজার ওয়াকফ্ স্টেটের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও বিভিন্ন দপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বরাবর এ অভিযোগের অনুলিপি দেয়া হয়েছে।’