আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণের মাঝামাঝি। তবুও চুয়াডাঙ্গায় পর্যাপ্ত বৃষ্টির দেখা নেই। এবছরে চুয়াডাঙ্গার ফসলের মাঠে পাটের বাম্পার ফলন হলেও আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাজ পড়ে গেছে। মাঝে মধ্যে হালকা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়ে থেমে যাচ্ছে। দীর্ঘসময় ধরে মুষলধারে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে খালবিল, নদীনালা, হাওড়-বাওড় গুলো বৃষ্টির পানিতে ভরাট হচ্ছে না। এলাকার বিভিন্ন ফসলি জমির মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, পাট গাছ গুলো বেশ বড় হয়ে গেছে। সপ্তাহখানেক পর থেকে পাট গাছ কেটে পঁচানোর জন্য পানিতে পাট জাগ দেয়া শুরু করবে চাষিরা।
তবে এলাকার পুকুর, খালবিল, নদীনালা, ছোট-বড় জলাশয়ে পাট জাগ দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি না থাকায় এখন বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করছে চাষিরা।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের পাটচাষি আবু হোসেন বলেন, ভুট্টা কাটার পর দেড় বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পাটগাছ আল্লাহর রহমতে ভালোই হয়েছে কিন্তু পাট জাগ দেয়া নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। যদি পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হয় তাহলে গাড়ী ভাড়া করে দুরের নদীতে পাট জাগ দিতে হবে। এতে খরচ অনেক বেশি পড়ে যাবে। পাট চাষে এমনিতেই শ্রমিক খরচ বেশি লাগে। অতিরিক্ত খরচ হলে লাভের মুখ দেখতে পাবো না।
জেলার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামের পাটচাষি আবু সাঈদ বলেন, কাঁটাখালী মাঠে এবার দুইবিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পাট গাছ ভালো হলেও পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পাট জাগ দেয়া নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। সপ্তাহ খানিক পরে পাটগাছ কাটা শুরু করবো এর মধ্যে বৃষ্টি না হলে সমস্যায় পড়ে যাবো। স্যালো মেশিনের সাহায্যে গর্ত বা খালে পানি বোঝাই করে পাট পঁচানোর জন্য জাগ দিলে খরচ অনেক বেশি পড়ে যায় এবং পাটের রং উজ্জ্বল না হওয়ার কারণে ভালো দাম পাওয়া যায় না।
একই উপজেলার আরেক পাট চাষি জহিরুল ইসলাম বলেন, এবার পাট গাছ অনেক ভালো হয়েছে তবে এখনও পর্যন্ত কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ার কারনে খুব টেনশনে আছি। যদি পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হয় তাহলে পাটগাছ গুলো শুকিয়ে পাঠখড়ি করা ছাড়া আর উপায় থাকবে না।
সোনালী আঁশের সোনালী স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে এলাকার খাল, বিল ও বাওড় গুলো পাট জাগ দেয়ার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানিয়েছে পাটচাষিরা।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিভাষ চন্দ্র সাহা বলেন, পানির অভাবে পাট জাগ দিতে কৃষকের কষ্ট হচ্ছে। পানির অভাবে চাষিরা বিপাকে পড়েছেন এটা ঠিক। চাষিদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাটের আঁশ ছাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি। এ পদ্ধতিতে পাট পচালে আঁশের মান ভালো থাকে।
তিনি আরও বলেন, সামনে বৃষ্টি-বর্ষায় নদ-নদী-খালে পানি বাড়লে হয়তো এ সমস্যা কিছুটা কেটে যাবে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা আশা করছি এ জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।