কর্পোরেট ডেস্ক: জনপ্রিয় বিজনেস রিয়ালিটি শো শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ-এর প্রথম সিজনে এ পর্যন্ত মোট ১০ কোটি টাকার বিনিয়োগ চুক্তি নিশ্চিত হয়েছে, যা এই শো-এর জন্য একটি মাইলফলক। দেশের অভিনব ও সম্ভাবনাময় সব ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ ও এর অভিজ্ঞ শার্কদের অবদান অনস্বীকার্য। দেশের ভিন্নধর্মী ও অভিনব কিছু ব্যবসা বিনিয়োগ পেয়েছে এই শো থেকে, যার মধ্যে আছে দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবসা ‘পালকি মোটরস’, অনলাইন বুকশপ ‘বুকশনারি’, মেডিকেল সফটওয়্যারের বিজনেস ‘পালস টেক’, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং বিজনেস ‘ওস্তাদ’, ডে-কেয়ার সার্ভিস বিজনেস ‘নতুন কিছু’, সামুদ্রিক মাছের ব্যবসা ‘মৎস্য’সহ আরও অনেকে।
সম্প্রতি শো-এর ১০ম পর্বে ১০ কোটি টাকার মাইলফলকটি পূর্ণ হয়। উত্তেজনাপূর্ণ এই পর্বে, চারটি উদ্ভাবনী ব্যবসা নিয়ে উদ্যোক্তারা শার্ক ট্যাংকের মঞ্চে আসে এবং উদ্যোক্তারা ব্যবসার অনন্যতা উপস্থাপন করে ও শার্কদের কাছে বিনিয়োগ চায়।
চলুন জেনে নিই এই পর্বে কারা এসেছিলেন বিনিয়োগের আশায়-
সততা ট্রেডার্স
শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশের এবারের পর্বে সবার আগে আসে নওগাঁ থেকে এম/এস সততা ট্রেডার্স। বাংলার ঐতিহ্যবাহী মাদুরের বিজনেস নিয়ে আসা এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা শার্কদের বেশ আকৃষ্ট করেন। তার তৈরি মাদুরগুলো শুধুমাত্র ঘরের শৈল্পিকতাকেই বাড়িতে তোলে না, বরং প্লাস্টিকের বর্জ্য কমিয়ে পরিবেশগত স্থায়িত্বে অবদান রাখে। তবে দুর্ভাগ্যবশত, সততা ট্রেডার্স শার্কদের কাছ থেকে কোনও ডিল পায়নি।
সোয়া গ্যালারি
সোয়া বড়ি থেকে দুধ বের করে তা দিয়ে দূগ্ধজাত খাদ্যদ্রব্য তৈরির এক ভিন্নধর্মী বিজনেস নিয়ে আসে এই পর্বের দ্বিতীয় ব্যবসা সোয়া গ্যালারি। তাদের প্রধান আইটেমগুলির মধ্যে রয়েছে টোফু, মসলা টোফু এবং সোয়া দুধ। সোয়া গ্যালারির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাস্থ্য সচেতন ভোক্তাদের দূধের চাহিদা পূরণ করা এবং একটি বিশ্বস্ত স্বাস্থ্যকর খাবারের উৎস সোয়া দুধকে প্রতিষ্ঠিত করা। সোয়া গ্যালারি সফলভাবে ২০% ইক্যুইটির বিনিময়ে ২০ লাখ টাকা নগদ এবং ১০ লাখ টাকা মার্কেটিং পরামর্শ সহায়তার একটি ডিল পেয়েছে।
ডুবো টেক
ডুবো টেক, একটি প্রযুক্তি নির্ভর স্টার্টআপ। বাংলাদেশের প্রথম পানির নিচের যানবাহন ব্র্যাকু ডুবুরি-এর স্রষ্টা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, দুবো টেক এআই, রোবোটিক্স এবং অটোমেশন নিয়ে কাজ করা। তারা ইতোমধ্যেই রবি ও ওয়ালটনের মতো দেশিয় কোম্পানি এবং নরওয়ের নরটেক এবং ইউএসএর ভেক্টর নাভের মতো আন্তর্জাতিক প্রস্তুতকারকদের সাথে পার্টনারশীপ করেছে। তাদের পুরস্কারগুলির মধ্যে রয়েছে সান ডিয়েগোতে রোবোসুব ২৩, বাংলাদেশে ৪র্থ আইআর কনফারেন্স এবং সিঙ্গাপুরে SAUVC 2018 থেকে পুরস্কার। ডুবো টেক শার্ক ট্যাংকের মঞ্চে ৫০ লাখ টাকা নগদ এবং ১০% ইক্যুইটির বিনিময়ে ইনকিউবেশন সেন্টারের আরএন্ডডি সুবিধাগুলি প্রাপ্তির একটি বড় ডিল পেয়েছে।
রেসিপি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড
২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া রেসিপি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় মশলা পণ্য উত্পাদন এবং খুচরা ও পাইকারি চ্যানেলের মাধ্যমে বিতরণ করে। তারা গ্রাহকদের এবং অংশীদারদের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক তৈরি করে, পণ্যের গুণমান এবং গ্রাহকের চাহিদার প্রতি সাড়া দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে দূর্ভাগ্যজনকভাবে কোম্পানিটি কোনো বিনিয়োগ পায়নি। তবে শার্করা এই কোম্পানির উদ্যোক্তাদের সাহস ও প্রচেষ্টাকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানান।
শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশের ১০তম এপিসোডটি বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের অবিশ্বাস্য বৈচিত্র্য এবং উদ্ভাবনকে প্রদর্শন করেছে। যদিও সব ব্যবসা ডিল পায়নি, তবে প্রতিটি ব্যবসাই তাদের উদ্যোক্তা জগতের প্রতি অনন্য শক্তি এবং প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছে।
শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ-এর নতুন পর্ব প্রতি শুক্রবার রাত ১০টায় সম্প্রচারিত হচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ-তে। এছাড়া যেকোনো সময় আগের পর্বগুলোও ফ্রি-তে দেখা যাবে সেখানে।
এই বিশ্ব বিখ্যাত শো-এর “টাইটেল স্পন্সর” হিসেবে রবি, “পাওয়ারড বাই স্পন্সর” হিসেবে স্টার্টআপ বাংলাদেশ, “কো-স্পন্সর” হিসেবে ট্যালি সলুশনস, “ব্যাংকিং পার্টনার” হিসেবে প্রাইম ব্যাংক, “স্ন্যাকস পার্টনার” হিসেবে অলিম্পিক ফুডি ইন্সট্যান্ট নুডলস, “বেভারেজ পার্টনার” হিসেবে সানকুইক, “ওয়ারড্রোব পার্টনার” হিসেবে ইয়োলো বাই বেক্সিমকো, “স্টাইল পার্টনার” হিসেবে ক্লথ স্টুডিও, “গিফট পার্টনার” হিসেবে মিনিসো, “হসপিটালিটি পার্টনার” হিসেবে হলিডে ইন, “সিকিউরিটি পার্টনার” হিসেবে ইউরো ভিজিল সিকিউরিটি সার্ভিস, “ফটোগ্রাফি পার্টনার” হিসেবে র এক্সপোজার, “ব্যাক স্টোরি পার্টনার” হিসেবে লাইভ টু ওয়েব, “রেস্টুরেন্ট পার্টনার” হিসেবে চাওস, “এন্টারটেইনমেন্ট পার্টনার” হিসেবে টিকটক এবং “পিআর পার্টনার” হিসেবে রয়েছে কনসিটো। অনুষ্ঠানটি প্রোডাকশনের দায়িত্বে ছিলো রেড ডট কমিউনিকেশন।