স্পোর্টস ডেস্ক: সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার ক্ষীণ আশা বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্য নিয়ে মঙ্গলবার সুপার এইট পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে।
অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের কাছে টানা দুই হারের কারনে বিশ্বকাপের সেমিতে উঠার পথ কঠিন হয়ে গেছে বাংলাদেশের। তবে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক জয়ে টাইগারদের সেমিতে খেলার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তারপরও অনেক যদি-কিন্তুর উপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের সেমিফাইনাল।
প্রথমত, ভারতের কাছে বড় ব্যবধানে হারতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিততে হবে বাংলাদেশকে। তাহলেই সেমিফাইনালের সুযোগ তৈরি হবে টাইগারদের। কিন্তু সোমবার রাতে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া জিতলে, আফগানিস্তানের সাথে খেলতে নামার আগেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে টাইগারদের।
অস্ট্রেলিয়ার জয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ঘন্টা বাজলেও সুপার এইটে নিজেদের শেষ ম্যাচ জিততে মরিয়া বাংলাদেশ। পাশাপাশি বাংলাদেশের জয়ে সেমিফাইনালে খেলার আশা শেষ হয়ে যাবে আফগানিস্তানের। দলগত পারফরমেন্সে আফগানিস্তান ভালো অবস্থায় থাকলেও জয়ের জন্যই মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আইসিসি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে কখনও জিততে পারেনি আফগানিস্তান। ৫০ ওভার বা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোনটিতেই নয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, মাত্র একবার দেখা হয়েছে দু’দলের। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে আফগানিস্তানকে মাত্র ৭২ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৯ উইকেটের জয় পেয়েছিলো টাইগাররা।
সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে ১১বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। এরমধ্যে বাংলাদেশের জয় ৫টিতে ও আফগানদের ৬টিতে।
সুপার এইট পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ৪৭ রানে হেরেছিলো আফগানিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে হারিয়ে অসাধারন জয়ের স্বাদ নেয় আফগানরা। আফগানিস্তানের ৬ উইকেটে ১৪৮ রানের বিপরীতে ১২৭ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেন্ট ভিনসেন্টের যে উইকেটে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে আফগানরা, এই ভেন্যু বাংলাদেশের পয়মন্ত। কারন এই ভেন্যুর উইকেট মন্থর গতির, যা টাইগারদের ঘরের মাঠের মত।
অস্ট্রেলিয়াকে ধরাশায়ী করার জন্য সেন্ট ভিনসেন্টের উইকেট বিবেচনায় বোলিং আক্রমন আক্রমন সাজিয়েছে আফগানিস্তান। যা অসিদের বিপক্ষে মাঠের লড়াইয়ে করে দেখিয়েছে আাফগানরা। তারপরও ফেভারিট বাংলাদেশ। সাধারনত ঘরের মাঠে এ ধরনের উইকেটে সারা বছরই খেলে থাকে টাইগাররা। এজন্য এমন উইকেটের কারনে বেশী সুবিধা পাবে বাংলদেশ।
সেন্ট ভিনসেন্টে খেলেই নেদারল্যান্ডস এবং নেপালের বিপক্ষে জয় দিয়ে সুপার এইটে জায়গা করে নিয়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু সুপার এইটে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচ অ্যান্টিগায় খেলতে হয়েছিলো টাইগারদের। এমন উইকেটে নিজেদের দক্ষতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বৃষ্টি আইনে ২৮ রানে এবং পরের ম্যাচে ভারতের কাছে ৫০ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ।
গাণিতিকভাবে এখনও বাংলাদেশের সেমিফাইনালে উঠার সুযোগ থাকলেও, ভিন্ন চিন্তা ঘুরছে সাকিব আল হাসানের মনে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভালো ক্রিকেট খেলে টুর্নামেন্ট শেষ করতে চান তিনি।
সাকিব বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমি মনে করি না ভারতের কাছে হারের পর আমাদের সেমিফাইনালে খেলার আর কোন সুযোগ আছে। তবে এটুকু বলতে পারি, শেষ ম্যাচে জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করার জন্য আমাদের সামনে এটি ভালো সুযোগ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই টুর্নামেন্টটি ভালোভাবে শেষ করতে চাই। আমাদের আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে। তারা খুবই ভালো দল। তাদের বিপক্ষে জিততে হলে আমাদের সেরাটা দিতে হবে।’ ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ একাদশ নিয়ে চারদিকে ব্যপক সমালোচনা হয়েছে। তাই আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তাসকিন আহমেদ (সহ-অধিনায়ক), লিটন দাস, সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলি অনিক, তানভির ইসলাম, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব।
আফগানিস্তান দল : রশিদ খান (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, করিম জানাত, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ ইশাক, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইব, নাঙ্গিয়াল খারোতি, নুর আহমেদ, নাভিন উল হক, ফজলহক ফারুকি, ফরিদ মালিক ও হজরতুল্লাহ জাজাই।