নিজস্ব প্রতিবেদক : আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ নামে নতুন যে আইনটি করা হচ্ছে, সেটিতে মানহানির মামলায় কারাদণ্ডের বিধান থাকবে না। কারাদণ্ড বাতিল করে সেখানে শাস্তি জরিমানা রাখা হচ্ছে। ফলে মানহানির মামলায় আর গ্রেপ্তারও করা যাবে না বলে জানান তিনি।
সোমবার (৭ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে সচিবালয়ে এ তথ্য জানান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মানহানির ক্ষেত্রে কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান ছিল। নতুন আইনে সেখানে পরিবর্তন এনে কারাদণ্ডের পরিবর্তে জরিমানার বিধান রাখা হবে। সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। অনাদায়ে ৩ থেকে ৬ মাসের কারাদণ্ড। এ সাজা শুধু জরিমানা না দিতে পারলেই ভোগ করতে হবে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি রহিতকরণ এবং হেফাজতকরণ রেখে আমরা ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ করছি। অনেকগুলো ধারা পরিবর্তন করা হচ্ছে। ৩১ ধারায় আগে ছিল সাত বছরের কারাদণ্ড। এখন সেটি কমিয়ে পাঁচ বছরে আনা হয়েছে। এ ছাড়া ৩২ ধারায় সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গের অপরাধে আগে ছিল ১৪ বছরের সাঁজা এখন সেটি ৭ বছর করা হচ্ছে। পাশপাশি হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধে অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এখানে গণমাধ্যমের জন্য আলাদা কোনো প্রভিশন রাখা হয়নি।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আর থাকবে না। বর্তমানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যে মামলাগুলো রয়েছে, সেগুলোর কার্যক্রম নতুন আইনের অধীনে চলবে। আগামী সেপ্টেম্বরে জাতীয় সংসদ অধিবেশন বসবে, ইনশাআল্লাহ তখন আইনটি সংসদে উপস্থাপন এবং পাস করা হবে।
তিনি বলেন, এ আইনের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো হলো- সাইবার সিকিউরিটির জন্য যেসব ধারাগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ছিল সেই ধারাগুলো এ আইনে অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে, কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।
এর আগে, সকালে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে প্রণীত বিতর্কিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ বাতিলে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে। বিশেষ করে এর ৫৭ ধারা দেশে-বিদেশে সমালোচিত হয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার সমুন্নত রাখা, সর্বোপরি মানুষের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিতে আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।