নিজস্ব প্রতিবেদক: চালু হওয়ার এক বছর পর পদ্মা বহুমুখী সেতুর ব্যয় ১ হাজার ১১৭ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার ৫৮০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই ব্যয় বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে কমিটির এ সভা হয়।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের (সমন্বয় ও সংস্কার শাখা) সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।
তিনি জানান, সেতু বিভাগের অধীন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের মূল সেতু নির্মাণ কাজের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ১ হাজার ১১৭ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার ৫৮০ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
২০০৭ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্প নেওয়া হয়। সে সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। পরে ২০০৯ সালে প্রথম সংশোধনীতে তা বাড়িয়ে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে দ্বিতীয় সংশোধনী আসে। সবশেষ বিশেষ সংশোধনী নামে আরেক দফা ব্যয় বাড়ালে তা ৩০ হাজার ১৯৩ কোটিতে উন্নীত হয়। এখন আবার পদ্মা সেতুর ব্যয় বাড়ানো হলো।
২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের দিন ২৬ জুন পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়। উদ্বোধনের আগে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য মোট খরচ হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে এক হাজার ৪৭১ হেক্টর। এর পাশাপাশি মাওয়া প্রান্তে ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার ও জাজিরা প্রান্তে ১২ দশমিক ৪ কিলোমিটার নদী শাসন করতে হয়।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। মূল সেতুর কাজ করেছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এর অ্যাপ্রোচ সড়ক ১২ দশমিক ১১৭ কিলোমিটার। ভায়াডাক্ট ৩ দশমিক ১৪৮ কিলোমিটার (সড়ক) এবং ৫৩২ মিটার (রেল)।
উল্লেখ্য, ২০০৯-১১ সালে পদ্মা সেতুর বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করা হয়। পরে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের এ সেতুর জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এজন্য অর্থায়ন করে এডিবি ও বাংলাদেশ সরকার।
২০১২ সালের জুনে বিশ্বব্যাংক তাদের ঋণ বাতিল করলে একই বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়। আর ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর বসানো হয় সেতুর শেষ স্প্যান।