কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : পদ্মা সেতু তৈরির জন্য নেওয়া ঋণের আরও ৩১৬ টাকা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)।
সোমবার (১৯ জুন) সরকারের অর্থ বিভাগের কাছে পদ্মা সেতুর ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির ৩১৬ কোটি ২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ঋণের এই অর্থ হস্তান্তর করেন সেতু বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মো. মনজুর হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মন্ত্রিপরিষদের অন্যান্য সদস্যরা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব, সচিব ও সাংবাদিকরা।
এর আগে, গত ৫ এপ্রিল ১ম ও ২য় কিস্তির মোট ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৫০ টাকা পরিশোধ করা হয়। এর ফলে প্রথম বছরে সর্বমোট ৬৩২ কোটি ৯৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৪৩ টাকা পরিশোধ করা হলো।
পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় পুরো অর্থ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে ঋণ হিসেবে দিয়েছে অর্থ বিভাগ।
গত ২৬ জুলাই সরকারের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সংশোধিত ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। চুক্তি অনুযায়ী এক শতাংশ সুদসহ ৩৫ বছরে ঋণের টাকা ফেরত দেবে সেতু কর্তৃপক্ষ।
ঋণ পরিশোধের শিডিউল অনুযায়ী, প্রতি অর্থবছর ৪টি কিস্তি করে সর্বমোট ১৪০টি কিস্তিতে সুদ-আসলে সর্বমোট ৩৬ হাজার ৩৯৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা পরিশোধ করা হবে। এছাড়া সেতুর ডিটেইল ডিজাইনের জন্য এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ১৫ বছর মেয়াদে ২টি ঋণ চুক্তির আওতায় দুই শতাংশ সুদে মোট এক কোটি ৭৪ লাখ ৫৩ হাজার স্পেশাল ড্রয়িং রাইট (এসডিআর) ঋণ নেয়া হয়েছে, যা বছরে ৪টি কিস্তি করে মোট ৬০টি কিস্তিতে সুদ-আসলসহ মোট ২ কোটি ৮০ লাখ ৯৯ হাজার ৩৩০ টাকা এসডিআর পরিশোধ করা হবে।
চুক্তি অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে সেতুটির ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারের এ ঋণ পরিশোধের জন্য ২০৫৬-৫৭ অর্থবছর পর্যন্ত সময় পাবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ অবকাঠামো পদ্মা সেতুটি গত বছরের ২৫ জুন উদ্বোধনের পর থেকে গতকাল (রোববার, ১৮ জুন) পর্যন্ত মোট ৭৭ কোটি ৯৭৫ লাখ ৮৭ হাজার টাকার টোল আদায় হয়েছে।
পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা হলেও এই টাকা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে ঋণ হিসেবে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই ঋণের টাকা ১৪০টি ত্রৈমাসিক কিস্তিতে আগামী ৩৫ বছরে ১ শতাংশ হারে সুদসহ ফেরত দিতে হবে।