কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার।
মঙ্গলবার (২ মে) ত্রৈমাসিক শ্রম শক্তি জরিপ প্রকাশ করে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিবিএসের জরিপের তথ্য তুলে ধরেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।
ত্রৈমাসিকের জরিপ অনুযায়ী, মার্চ পর্যন্ত বেকারদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ১৭ লাখ ১০ হাজার জন। আর বেকার নারী ৮ লাখ ৮০ হাজার।
বিবিএসের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিক অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর বেকার সংখ্যা ছিল ২৩ লাখ ২০ হাজার জন। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ৯০ হাজার জনে। মোট বেকারের মধ্যে পুরুষ ১৭ লাখ ১০ হাজার, নারী ৮ লাখ ৮০ হাজার জন।
সপ্তাহে যারা এক ঘণ্টাও কোনো কাজ করেননি কিন্তু কাজের জন্য প্রস্তুত ছিলেন তাঁদেরকে বেকার হিসেবে ধরা হয়। অর্থাৎ সপ্তাহে কমপক্ষে এক ঘণ্টা কাজ করে মজুরি গ্রহণ করলেই তিনি বেকার হিসেবে গণ্য হবেন না।
বিবিএস বলছে, বর্তমানে দেশের মোট শ্রমশক্তি ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার জন এবং নারী ২ কোটি ৫৪ লাখ ৪০ হাজার জন। মোট কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী ৭ কোটি ১১ লাখ। কর্মে নিয়োজিত শ্রমশক্তির মধ্যে কৃষি খাতে রয়েছে ৩ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার, শিল্পে ১ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার এবং সেবা খাতে ২ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার জন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনারা আরেফিন। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান।
শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য সংগ্রহের জন্য সমগ্র বাংলাদেশে ১ হাজার ২৮৪টি পিএসইউ এবং প্রতিটি পিএসইউতে ২৪টি থানা দ্বৈবচয়নের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কোয়ার্টারে ৩০ হাজার ৮১৬ খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এভাবে ১ বছরে তিন মাস ধরে চারটি কোয়ার্টার সম্পন্ন করা হবে। এই জরিপের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ২০২৩ সালে চলমান থাকবে। মূলত এই জরিপে প্রাপ্ত উপাত্ত হতে জাতীয় শ্রমশক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার ও কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব নিরসনে প্রয়োজনীয় নীতি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৩ এর প্রথম ত্রৈমাসিকের (জানুয়ারি-মার্চ) ফলাফল অনুযায়ী, মোট শ্রমশক্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী ৭৩ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন বা ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯০ হাজার। এরমধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার আর নারী ২ কোটি ৫৪ লাখ ৪০ হাজার। এছাড়া কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী বর্তমানে ৭১ দশমিক ১০ মিলিয়ন (পুরুষ ৪৬ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন, মহিলা ২৪ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন)।
২০২২ সালের জরিপে দেশে মোট শ্রমশক্তি ছিল ৭ কোটি ৩৪ লাখ ১০ হাজার। এরমধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৮ হাজার এবং নারী ২ কোটি ৫৯ লাখ ৩ হাজার ছিল।
শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৩ প্রথম কোয়ার্টার অনুযায়ী, শ্রমশক্তির বাইরে অবস্থিত জনগোষ্ঠী ৪৬ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন (পুরুষ ১১ দশমিক ১৯ মিলিয়ন, নারী ৩৫ দশমিক ২০ মিলিয়ন)। এছাড়া শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ৬১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। অর্থনৈতিক খাত অনুযায়ী কৃষিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৩১ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন, শিল্পখাতে ১২ দশমিক ২৫ মিলিয়ন এবং সেবায় ২৬ দশমিক ৯১ মিলিয়ন। শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৩ এর প্রথম ত্রৈমাসিক যুব শ্রমশক্তি ২৭ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন (পুরুষ ১৪ দশমিক ৩ মিলিয়ন, মহিলা ১৩ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন)।
এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ও নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এসডিজি এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে জানান কর্মকর্তারা।