নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর রাজধানীর নিউমার্কেটের নিউ সুপার মার্কেট (দ.) ভবনের তৃতীয় তলায় লাগা ভয়াবহ আগুন ৯টা ১০ মিনিটের দিকে নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১০টার দিকে এ তথ্য জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।
তিনি বলেন, এখন আগুন পুরোপুরি নির্বাপন ও ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে। ৯টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা আগে ঘোষণা দেইনি।
এর আগে শনিবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩২টি ইউনিট কাজ করে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-মিডিয়া) শাহজাহান সিকদার বলেন, ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে নিউ সুপার মার্কেটে এ আগুন লাগে এবং ৫টা ৪৩ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ইউনিট সংখ্যা বাড়িয়ে ৩২টি করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি ইউনিটের পাশাপাশি, বিজিবির ১২ প্লাটুন সদস্য, র্যাবের ১৭টি টিম, সেনা-নৌ ও বিমানবাহিনী এবং পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। তবে অতিরিক্ত ধোঁয়ার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
আগুন নিয়ন্ত্রণে অবশ্য বঙ্গবাজারের মতো পানির সংকটে পড়তে হয়নি ফায়ার ফাইটারদের। ঢাকা কলেজের পুকুর এবং আজিমপুর এলাকার বিভিন্ন জলাধার থেকে পানি ব্যবহার করে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্য ও ৯ দোকান কর্মচারি অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষতি হয় প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি। এ অগ্নিকাণ্ডের জন্য ব্যবসায়ীদেরকে পরোক্ষভাবে দায়ী করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তদন্ত কমিটি।
দেখা যায়, নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হলেও আগুন মার্কেটের একপাশে ছিল। তবে দুই ঘণ্টা পর আগুন তৃতীয় তলার গোটা ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়েছে। দ্বিতীয় তলায় এখনও আগুন না ছড়ালেও প্রচণ্ড ধোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে ব্যবসায়ীরা মার্কেটের প্রথম তলার দোকানগুলো থেকে ঝুঁকি নিয়ে মালামাল বের করে আনছেন। মার্কেটটিতে ছেলেদের গেঞ্জি, ফুল ও হাফ প্যান্ট, ট্রাউজার, শার্ট ও মেয়েদের টপসসহ নানা ধরণের পোশাক বিক্রি করা হয়ে থাকে। ঈদ উপলক্ষ্যে অতিরিক্ত মাল মজুদ করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। তাই বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন তারা।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি কাজ করছে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া ব্যবসায়ীরাও আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সাহায্য করছে।


