নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এ তালিকাভুক্ত তথ্যপ্রযুক্তি খাতের দুই কোম্পানি আমরা নেটওয়ার্ক লিমিটেড এবং আমরা টেকনোলজিস লিমিটেড। কোম্পানি দুটি কর্পোরেট গভর্ন্যান্স কোড অমান্য করেই যাচ্ছে।
বিশেষ পর্যবেক্ষণে জানা গেছে, আমরা নেটওয়ার্ক লিমিটেড ও আমরা টেকনোলজি লিমিটেড কোম্পানি দুটি এমডির পদে রয়েছেন একই ব্যক্তি। এ কোম্পানি দুটির চেয়ারম্যান হলেন সৈয়দ ফারুক আহমেদ। উভয় প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন সৈয়দ ফারহাদ আহমেদ।
ফলে করপোরেট গভর্ন্যান্স কোড (সিজিসি) না মেনেই আমরা নেটওয়ার্ক লিমিটেড ও আমরা টেকনোলজি লিমিটেড কোম্পানি দুটি পরিচালনা করছেন সৈয়দ ফারহাদ আহমেদ। যা করপোরেট গভর্ন্যান্স কোড (সিজিসি) লঙ্ঘণীয়।
কর্পোরেট গভর্ন্যান্স কোর্ড (৩ জুন ২০১৮) এর ৩ (১) (সি) ধারায় বলা আছে, কোনও কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, কোম্পানি সচিব বা প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা একইসময় অন্য কোনও কোম্পানি, প্রতিষ্ঠানে একই পদে বা অন্য কোনও পদে নিযুক্ত থাকতে পারবেন না।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোর্পোরেট কোড জারি করলেও তা আসলেই সঠিকভাবে মানছেনা কোন কোম্পানিই। এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা গুলো কর্পোরেট কোড জারি করেই দায় সেড়েছে । নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদারকির অভাবে কোম্পানিগুলোর অনিয়ম নিয়মিত হয়ে যাচ্ছে। আর ঝুঁকিতেই থেকে যাচ্ছে পুঁজিবাজার।
এ প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মোঃ মিজানুর রহমান, এফসিএস বলেন, “ ডিএসই ও সিএসই এর সঠিক তদারকির অভাবে এসব কোম্পানি অনিয়ম করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। তিনি আরোও বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রনকারি কর্তৃপক্ষের ঠিলে-ঠালা মনিটরিং ও বিএসইসির উদাসিনতায় পুঁজিবাজারে এ ধরনের কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পুঁজিবাজার কখনোই স্বাভাবিক আচরণ করছেনা। আর বাজারে কিছু হলেই নিয়ন্ত্রনকারি কর্তৃপক্ষ তার দায় চাপিয়ে দেন এর ওর ঘারে এবং প্রতারিত হন সাধারন বিনিয়োগকারি”।
আমরা নেটওয়ার্ক লিমিটেড এর মোট শেয়ার সংখ্যা ৫ কোটি ৬২ লাখ ২৩ হাজার ৬৮২ টি। তাদের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকের কাছে ৩৩.০৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ২৩.৭৫ বিনিয়োগকারি শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারি ১৫.৯৮ শতাংশ এবং ২৭.২৩ সাধারন বিনিয়োগকারিদের হাতে।
কোম্পানিটির অনিরিক্ষত ১ম প্রান্তিকে (১ম জুলাই২০২১- ৩০ সেপ্টেম্বর২০২১) প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায় কোম্পানিটির ১ম প্রন্তিকে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয় ০.৫১ টাকা যা একই সময় আগের বছর ছিলো ০.৭৮ টাকা। ১ম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ০.৩১ টাকা যা একই সময়ে আগের বছর ছিলে ১.৯৩ টাকা। ১ম, প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট এ্যাসেট ভ্যালু হয়েছে ৩৭.৬০ টাকা। যা একই সময় আগের বছর ছিলো ৩৭.০৯ টাকা।
কোম্পানিটি বিগত ৫ বছরে লভ্যাংশ দিয়েছে যথাক্রমে ২০২১ সালে ৫ শতাংশ ক্যাশ ডেভিডেন্ড, ২০২০ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডেভিডেন্ড, ২০১৯ সালে ৫ শতাংশ ক্যাশ ডেভিডেন্ড এবং ৫ শতাংশ স্টক ডেভিডেন্ড, ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডেভিডেন্ড এবং ২০১৭ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডেভিডেন্ড ।
অন্যদিকে আমরা টেকনোলজিস লিমিটেড এর মোট শেয়ার সংখ্যা ৫ কোটি ৮১ লাখ ৩৭ হাজার ৮৬৪ টি। তাদের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকের কাছে ৩০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারি ৩৩.৯৫ শতাংশ এবং ৩৬.০৫ সাধারন বিনিয়োগকারিদের হাতে।
কোম্পানিটির অনিরিক্ষত ১ম প্রান্তিকে (১ম জুলাই২০২১- ৩০ সেপ্টেম্বর২০২১) প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায় কোম্পানিটির ১ম প্রন্তিকে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয় ০.৫৩ টাকা যা একই সময় আগের বছর ছিলো ০.৩৯ টাকা। ১ম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো কমেছে ১.২৬ টাকা যা একই সময়ে আগের বছর ছিলে ০.০৪ টাকা। ১ম, প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট এ্যাসেট ভ্যালু হয়েছে ২৪.৪৫ টাকা। যা একই সময় আগের বছর ছিলো ২৩.৯৩ টাকা।
কোম্পানিটি বিগত ৫ বছরে লভ্যাংশ দিয়েছে যথাক্রমে ২০২১ সালে ৫ শতাংশ ক্যাশ ডেভিডেন্ড, ২০২০ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডেভিডেন্ড, ২০১৯ সালে ৫ শতাংশ ক্যাশ ডেভিডেন্ড এবং ৫ শতাংশ স্টক ডেভিডেন্ড, ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডেভিডেন্ড এবং ২০১৭ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডেভিডেন্ড ।
গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর ওঠানামা করে সর্বনিম্ন ২৩.১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪০.৫০ টাকায়। কোম্পানিটি ২০১২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে মার্কেটের এ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে।