সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে খড়খড়িয়া, বিনোদপুর, কুসুম্বী দাখিল মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও আয়া পদে নিয়োগ পরিক্ষা স্থগিত করা হয় পর পর তিনবার। কিন্তু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম যোগদানের পর কোনো অনিয়মের তোয়াক্কা না করে নিয়োগ বোর্ডের ব্লাং ফলাফল শীটে স্বাক্ষর করে নিয়োগ পরিক্ষা বাস্তবায়ন করেন।
তারপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রোকনপুর দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত না থেকেও নিরাপত্তাপ্রহরী, আয়া ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদে চাকরির নিয়োগ বাস্তবায়ন করেন এই অসাধু কর্মকর্তা। বিশেষ করে রোকনপুর দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয় শুক্রবার সকাল ৭ টায়। ঐ সময় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সিরাজগঞ্জ জেলায় নির্বাচন সংক্রান্ত একটি মিটিংয়ে ছিলেন বলে নিশ্চিত করেন উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা। তারও আগে আরো কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বানিজ্যের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এদিকে নিয়োগ বানিজ্যের প্রতিযোগিতায় জমিজমা ও গরু-বাছুর বেচে সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছেন চাকরি প্রত্যশী অসহায় পরিবারের অনেক লোকজন। গত ৪ মে শনিবার ধাপ ওয়াশীন উচ্চ বিদ্যালয়ের ২টি পদে নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
ঐ দিন বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরিক্ষার সময় একটু অদূরে লিখন নামে একটি ছেলেকে দোকানের সামনে দাড়িয়ে গুমড়ে-গুমড়ে কাঁদতে দেখা যায়। তিনি বলেন, আমার কাছ থেকে আট লাখ টাকা নিয়েছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি ও মাধাইনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিলুর রহমান হাবিব, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মাদ। পরে ১০ লাখ টাকা করে নিয়ে চাকরি দিচ্ছেন অন্যদের। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির কারণে আমি পথে বসে গেলাম। দুইবার নিয়োগ পরিক্ষা স্থগিত করা হয়। কিন্তু মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে নিয়োগ পরিক্ষা বাস্তবায়ন করলেন।
তবে ধাপ ওয়াশীন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হাবিলুর রহমান হাবিব ও প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মাদ চাকরি প্রত্যশী লিখনকে পাগল বলে আখ্যায়িত করেন।
অভিযোগ রয়েছে, রোকনপুর দালিখ মাদ্রাসার নিরাপত্তাপ্রহরী, আয়া ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদে নিয়োগের জন্য একটি পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে তা গোপন রাখা হয়। পুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়টিও চাকরির বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয় নাই। তাছাড়া এই নিয়োগের বিরুদ্ধে আদালাতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মামলা নং ৪০/২৪। বিশেষ করে মাদ্রাসার সভাপতি আলামিন কাওছারের সহোদর ছোট ভাই আল মাহমুদ নিয়োগ পরিক্ষার পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে চাকরির পরিক্ষায় অংশ নেয়। যা নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কিন্তু মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে একের পর এক নিয়োগ বানিজ্য বাস্তবায়ন করে চলেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিধি মোতাবেক নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব’) মো. আফছার আলী দৈনিক খবর পত্রকে বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।