তিমির বনিক, স্টাফ রিপোর্টার: “একটি পাতা দুইটি কুড়ি” চায়ের রাজধানী খ্যাত ও প্রবাসী অধ্যুসিত সবুজে ঘেরা পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারে এখন তীব্র শীতের মৌসুম। শীতের মৌসুমের এই সময়টাতে ঊষ্ণতা ছড়াচ্ছে নির্বাচনী হাওয়ায়। আর মাত্র ক’দিন পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপি-জামায়াতসহ নিবন্ধিত বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ বিহীন শুরু হওয়া এই নির্বাচনে জেলার চারটি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার চার প্রার্থী।
এর বাইরে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (ইনু) ,তৃণমূল বিএনপি, ইসলামীক ফ্রন্ট, ইসলামী ঐক্যজোট, বিকল্পধারা, ওয়াকার্স পার্টি ও ন্যাশনাল পিপল্স পাটি ও স্বতন্ত্রসহ মোট ২২ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে থাকলেও ২২ প্রার্থীর মধ্যে নেই একজনও নারী প্রার্থী।
জেলার চারটি আসনে ১৫ লাখেরও বেশি ভোটারের মধ্যে প্রায় অর্ধেক নারী হলেও নির্বাচনী মাঠে নেই তাদের কোন প্রতিনিধিত্ব। অথচ জেলার এই চারটি আসনে নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দিতা করে জেতার মতো অনেক যোগ্য নারী রয়েছেন। যাদের নানা মহলে পরিচিতির পাশাপাশি রয়েছে গ্রহণযোগ্যতাও। চারটি আসনের মধ্যে একেবারে নারী প্রার্থী না থাকার বিষয়টিকে রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর দৈন্যতা হিসেবেই দেখছেন অনেকে। এর বাহিরে এখানকার রক্ষণশীলতার গণ্ডি পেড়িয়ে মূলধারার রাজনীতিতে নারীদের অংশ নেয়াটাও অনেক কঠিন।
এদিকে আসন্ন নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের সাবেক ও বর্তমান মিলে দুইজন নারী প্রার্থী দলের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত দু’জনের কেউই দলীয় মনোনয়ন পাননি। এদের একজন সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসীন ও আরেকজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন। এই আসনে নৌকার মনোনয়ন পান শিল্পপতি মো: জিল্লুর রহমান। এছাড়া এই আসনে আরও ৬ প্রার্থী ভোটের মাঠে থাকলেও ৬ জনের মধ্যে নেই একজন ও নারী প্রার্থী। শুধু মৌলভীবাজার-৩ সংসদীয় আসনে নয়, একই চিত্র জেলার বাকী ৩টি সংসদীয় আসনের ক্ষেত্রেও।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য কবি ও লেখক এবং মৌলভীবাজার জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন এর সাথে। প্রতিকুল পরিবেশে রাজনৈতিক অঙ্গণে বেড়ে উঠা প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, মৌলভীবাজার আসলে কনজারভেটিব এলাকা, তাছাড়া এখানে শিক্ষার হারও কম। এখনো এখানকার নারীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার মতো পরিপক্ষ তৈরি হয়ে উঠেননি। তবে তিনি জানান, আগামীতে গণপ্রতিনিধিত্ব (আরপিও) অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোতে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতে তিনি কাজ করে যাবেন।
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজার জেলায় ৬৭ টি ইউনিয়ন ও ৫টি পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছেন ১৫ লাখ ১৬ হাজার ৫৩৫ জন। এরমধ্যে পূরুষ ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৯৪৩জন এবং মহিলা ভোটার ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৮জন। মোট ভোট কেন্দ্র ৫৪৯টি ও স্থায়ী অস্থায়ী মিলিয়ে বুথ থাকবে ৩ হাজার ৩০৫টি।