আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জোড়গাছা গ্রামে ঈগল ও ফ্রীজ প্রতীকের সমর্থকদের হামলায় নৌকার সমর্থক ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান (৩৭) ও তার স্ত্রী জেসমিন খাতুন (২৮) আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে জোড়গাছা গ্রামে এঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় জেসমিন খাতুনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আনিছুর রহমান আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ইউপি সদস্য।
ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমরা নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের সমর্থক। প্রতিবেশি আব্দুর রশিদ নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করলেও লুকিয়ে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার সমর্থক হিসেবে কাজ করছে বলে জেনেছি। তার দুই ছেলে তরুণ ও তপন ঈগল প্রতীকের সমর্থক হিসেবে কাজ করছেন। আব্দুর রশিদের বড় ভাইয়ের ছেলে হাসান ফ্রীজ প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজ্জাক খানের ফ্রীজ প্রতীকের সমর্থক। যেহেতু জানা মতে আব্দুর রশিদ নৌকার সমর্থক তাই শুক্রবার সন্ধ্যায় আব্দুর রশিদসহ উপস্থিতদের সামনে “নিজের ঘর আগে সামলিয়ে তারপর নৌকা প্রতীকের ভোট চাইতে হবে’ এমন কথা বলি। এরপরই আব্দুর রশিদ, তার দুই ছেলে ও ভাস্তের সঙ্গে আমার কথা সামান্য কাটাকাটি হয়। তারপর যে যার মত চলে যায়।
আনিছুর রহমান আরও বলেন, আজ সকালে হঠাৎ আব্দুর রশিদের দুই ছেলে, তার ভাস্তেসহ ৩০-৪০ জন লোকজন নিয়ে আমার উপর হামলা করে কিল-ঘুষি দিয়ে আহত করে। আমার স্ত্রীকেও লাঠি দিয়ে হাতে আঘাত করেছে এবং তার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়েছে। আমি খুব বেশি আহত না হলেও আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আহত জেসমিন খাতুনকে সদর সদর হাসপাতালের নিয়ে আসা তার বড় জা সাজেদা পারভিন বলেন, আমার দেবর ইউপি সদস্যসহ আমরা নৌকার ভোট করি। আর যারা জেসমিনকে মেরেছে তারা ঈগল প্রতীকের সমর্থক। গতকাল শুক্রবার আমার দেবর তাদের বলে আমার কাছে টাকা দিয়ে ঈগল ও ফ্রীজ প্রতীকের ভোট কেন করছো। এ নিয়ে দুপক্ষ হুমকি ধামকি দেয়। এরই জের ধরে আজ সকালে ঈগল প্রতীকের সমর্থকরা লাঠিসোঠা নিয়ে আমার বাড়িতে এসে দেবরকে কিল-ঘুষি দিয়ে আহত করে। তার স্ত্রীকে চুল চেপে ধরে মাটিতে ফেলে লাথি মারতে থাকে এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এসময় জেসমিনের গলায় একটি স্বর্ণের চেইন নিয়ে নেই।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, ওই নারীর হাতের কব্জি ফোলা এবং কালো স্পট আছে। এক্স-রে করার পরামর্শ দিয়েছি। তারপর বলা যাবে আঘাতের পরিমান।
আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) আব্দুল গনি মিয়া বলেন,আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ইউপি সদস্য আনিছুর এবং তার প্রতিবেশি চাচা আব্দুর রশিদ দুজন-ই নৌকার পক্ষে। আবার ওই চাচার দুই ছেলের মধ্যে একজন ঈগল অপরজন ফ্রীজ প্রতীকের পক্ষে। তাদের মধ্যে কার কতজন লোকজন আছে এ নিয়ে সামান্য ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এর সঙ্গে মহিলারাও যোগ দেয়। এতে ইউপি সদস্যের স্ত্রী হাতে লাঠির আঘাতে আহত হয় এবং তার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়েছে বলেও মৌখিক অভিযোগ করে। মামলা করলে তদন্ত পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।