তিমির বনিক, স্টাফ রিপোর্টার: মহান বিজয় দিবসে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত অনুষ্ঠানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুলিশকে হেয় করে শারীরিক কসরত প্রদর্শন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন জুড়ী থানার ওসি।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বিজয় দিবসে মৌলভীবাজারের জুড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় জুড়ী তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজ মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, আনসার ও বিজিপি, ফায়ার সার্ভিস, স্কাউটস, গার্লস ইন গাইড, কাবস, শিশু কিশোর সংগঠন এবং স্কুল মাদ্রাসা, কলেজের শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদশর্নী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন উপজেলা প্রশাসন। সে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রকম শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে পশ্চিম বড় ধামাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইভটিজিং, এসিড বিরোধী একটি শারিরিক কসরত শুরু করেন। কসরত চলাকালে এর একটি দৃশ্যে দেখা যায়, একটি বখাটে একটি মেয়েকে ইভটিজিং করে এসিড মেরে দেয়। পরে মেয়ের পরিবার তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয় এবং অভিভাবক থানায় গিয়ে ওসির কাছে বিচার চান। সেই সময় ওসি তাকে বলেন, টাকা দিতে হবে। অভিভাবক টাকা না দিলে ওসি তাকে লাথি মেরে বের করে দেন। এই দৃশ্য চলাকালে অতিথি মঞ্চে বসে থাকা জুড়ী থানার ওসি এসএম মাইন উদ্দিন তাৎক্ষণিক এটির প্রতিবাদ জানালে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ইউএনও এবং জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি অবহিত করে অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন ওসি। পরবর্তী কসরত ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান চললেও সেখানে তিনি আসেননি। এ সময় জুড়ী থানার তদন্ত ওসি হুমায়ুন কবিরসহ পুলিশের অন্যান্য সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে পশ্চিম বড় ধামাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিক বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা পাকিস্তান সময়ের একটি শারীরিক কসরত প্রদর্শন করেছিল। সেখানে থানায় গিয়ে বিচার না পাওয়ার দৃশ্য পরিবেশন করা হয়। কুচকাওয়াজ শেষ হওয়ার পূর্বে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে ওসি সাহেব রাগে অভিমানে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে চলে যান।
জুড়ী থানার ওসি এসএম মাইন উদ্দিন বলেন, একটি ডিসপ্লেতে (শারীরিক কসরত) পুলিশকে খুব বাজেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল। আমি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেছি। বিষয়টি আমি সেখানে উপস্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও’কে জানিয়েছি। তবে, রাগ করে অনুষ্ঠান ত্যাগ করিনি। আমি ব্যক্তিগত কারণে সেখান থেকে চলে এসেছি।
নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকানন্ত হাজংয়ের সভাপতিত্বে ও একাডেমিক সুপারভাইজার আলা উদ্দিনের পরিচালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ মোঈদ ফারুক। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাস, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান রঞ্জিতা শর্মাসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগের, বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।