আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গার নিরাময় ক্লিনিকে সিজারিয়ানের পর মমতাজ খাতুন (৩২) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার রাত ৮ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কর্তব্যে অবহেলায় মমতাজ খাতুনের মৃত্যু হয় বলে তার পরিবারের লোকজনের অভিযোগ।
নিহত মমতাজ খাতুন কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের পান্তাপাড়া গ্রামের ইমান আলীর স্ত্রী ছিলেন। অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি অশ্বিকার করেছেন ক্লিনিক মালিক বিল্লাল হোসেন। মমতাজ খাতুনের শরীরে অস্ত্রপচারকারী চিকিৎসক ডা. আবু হাসানুজ্জামান নুপুর রোগীর অসুস্থ্যতার বিষয়ে কিছুই জানতেন না।
নিহত মমতাজ খাতুনের বোন ফুলমনি খাতুন বলেন, প্রসববেদনা শুরু হলে দিন ১১ আগে আমার বোন মমতাজ খাতুনকে কার্পাসডাঙ্গা নিরাময় ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করি। নিরাময় ক্লিনিকের মালিক পক্ষ ডা. আবু হাসানুজ্জামান নুপুরকে দিয়ে আমার বোনের সিজার করান। সিজারিয়ানের ৪ দিন পর ক্লিনিক মালিক ছাড়পত্র দিয়ে আমার বোনকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
ফুলমনি খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ক্লিনিক মালিক আমার বোনকে ছুটি দিলেও তার ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। সিজারিয়ানের সময় আমার বোনের রক্ত শুন্যতা থাকলেও চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সেটা এড়িয়ে গেছে।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ডা. নুপুর আমার বোনকে ঠিকমতো চিকিৎসা দেননি। এমনকি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাদের দ্বায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেননি। বুধবার সকাল থেকে আমার বোনের ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকলে আমরা তকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। আমার বোনের শরীরে ১ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮ টার দিকে মারা যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোর্শেদ আলম বলেন, মমতাজ খাতুনের ক্ষতস্থান থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। রাজশাহী নেয়ার প্রস্তুতিকালে রাত ৮ টার দিকে ওই রোগী মারা যায়।
নিরাময় ক্লিনিকের মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, সিজারিয়ানের চার দিন পর রোগীর ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। দিন চারেক পর রোগীর ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হওয়ায় পরিবারের লোকজন তাকে আমাদের এখানে নিয়ে আসে। আমাদের এখানে কোন ডাক্তার না থাকায় পাশের এক ক্লিনিক থেকে ওই রোগীর শরীরে রক্ত দেয়া হয়। সুস্থ হয়ে আবার বাড়িতে চলে যায়। বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গায় কবে গেছে, কিভাবে গেছে সেটা আমাদের জানা নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. আবু হাসানুজ্জামান নুপুর বলেন, সিজারিয়ান করার পর ওই রোগীর বিষয়ে আমার কিছুই জানা ছিলনা। মঙ্গলবার শুনেছি ওই রোগীর শরীরে রক্ত দেয়া হয়েছে। আজ (বুধবার) ওই রোগীকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর বেশি আমার আর কিছু জানা নেই।