নিজস্ব প্রতিবেদক : গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় তিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়ে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি রয়েছেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার মাথায় আঘাত লেগে রক্তক্ষরণ হয়েছে, পাশাপাশি নাক ও ডান চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সকালে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোস্তাক আহমেদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শুক্রবার রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে নুরুল হক নুরকে হাসপাতালে আনা হয়। এসময় তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় ছিলেন এবং নাকের ভেতরে গজ ব্যান্ডেজ দেয়া ছিল। পরে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
ডা. মোস্তাক আহমেদ বলেন, রাতেই তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সকালে মাথার সিটিস্ক্যান করানো হলে দেখা যায়, মাথায় আঘাতের পাশাপাশি সামান্য রক্তক্ষরণ হয়েছে। নাক ও ডান চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে। তার চোখ ও মুখ ফুলে গেছে, চোখে রক্ত জমাট বেঁধেছে। তবে শরীরের অন্য কোথাও বড় ধরনের আঘাত পাওয়া যায়নি।
নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাহিদ রায়হান জানান, নুর এখনও শঙ্কামুক্ত নন। মাথার ভেতরে পানি জমাট বেঁধেছে। তবে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের ধারণা, আপাতত কোনো অপারেশনের প্রয়োজন নেই।
এছাড়া নুরুল হক নুরের চিকিৎসায় ছয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, আহত অবস্থায় রাতে যখন আনা হয় প্রথমে ক্যাজুয়ালটি বিভাগের চিকিৎসকরা নুরকে দেখেন। পরে সেখান থেকে তাকে ওয়াল স্টক ইমারজেন্সি সেন্টারে (ওসেক) রাখা হয়। পরে রাতেই আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
জেনারেল আসাদুজ্জামান আরও বলেন, নুরের নাকের হাড় ভেঙে গেছে, চোখের ওপরে আঘাত রয়েছে, মাথায় সামান্য রক্তক্ষরণ রয়েছে। রাতেই পাঁচ বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয় এবং তাদের পরামর্শে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের এই পরিচালক বলেন, নুর বর্তমানে স্টাবল রয়েছেন। তবে ৪৮ ঘণ্টা না যাওয়া পর্যন্ত শঙ্কামুক্ত বলছি না। তার মস্তিষ্কে যে রক্তক্ষরণ রয়েছে, তা ওষুধে ভালো হয়ে যাবে বলে আশা করছি।
মেডিকেল বোর্ডে হাসপাতালের পরিচালক, এনেস্তেসিয়ার প্রধান, ক্যাজুয়ালটি বিভাগের একজন, নাক কান গলা বিভাগের একজন, নিউরোসার্জারি বিভাগ ও চক্ষু বিভাগের সদস্য রয়েছেন।
এর আগে, শুক্রবার রাতেই গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান জানান, নুরের মাথায় আঘাত লেগে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। পরে চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে রাত ৯টার দিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধাওয়া দিয়ে আল রাজী টাওয়ারের সামনে অবস্থান নেওয়া গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় তাদের ওপর লাঠিচার্জ করা হলে নুর গুরুতর আহত হন।


