আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে সরকারী চাকরী ও স্কুল মাদ্রাসা সরকারীকরণ করে দেওয়ার নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। চাকরী প্রত্যাশীদের সরকারী দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাক্ষর ও চিঠি জাল করে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে চাকরী দেওয়ার নামে গ্রহন করা টাকা ফেরৎ না দিয়ে চক্রটি উল্টো চাকরী প্রত্যাশী ও তার স্বজনদের নামে মিথ্যা হয়রানী মামলা করেছেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আড়মুখ গ্রামের ওবাইদুল হকের ছেলে আহসান হাবিব সোমবার বিকালে স্থানীয় প্রেসক্লাব বরাবর এক লিখিত অভিযোগে এ তথ্য জানান।
আহসান হাবিব লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনিসহ ৮ জনকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কৃষি সম্প্রসারণ এবং বন বিভাগের পিয়ন পদে সরকারি চাকরী দেওয়ার জন্য শৈলকুপা উপজেলার ভগবাননগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল হাসান ও পাগলাকানাই এলাকার শফিকুলের কন্যা প্রাইম ইন্সুরেন্স কোম্পানীর বীমা কর্মী শারমিন আক্তার ৩৪ লাখ টাকার চুক্তি করেন। চুক্তি মোতাবেক তাদের দুইজনকে ২০ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। আর চুক্তির বাকী টাকা চাকরীতে যোগদান করার পর দেওয়ার কথা জানান।
আহসান হাবিব জানান, তার আপন চাচা আড়মুখ গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে স্কুল শিক্ষক মোজাম্মেল হক চুক্তিপত্রে সাক্ষর করেন এবং তার চাচার নীজ নামীয় তিনটি ব্ল্যাংক চেক প্রদান করেন। কিন্তু প্রতারক আবুল হাসান ও শারমিন আক্তার বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করলে আহসান হাবিবসহ যোগদান করতে পারেন নি। অভিযোগে দাবী করা হয়, চুক্তি মোতাবেক প্রদান করা ২০ লাখ টাকা, তিনটি চেকের পাতা ও এক’শ টাকার ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্প ফেরৎ চাইলে ওই দুই প্রতারক তাদের কাছে জমা থাকা বøাঙ্ক চেকে ইচ্ছামতো টাকার অংক বসিয়ে আমার চাচা স্কুল সরকারী প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক মোজাম্মেলের নামে চেক ডিজঅনারের মামলা করেন।
আহসান হাবিব লিখিত অভিযোগে আরো জানান, আবুল হাসান ও শারমিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরী দেওয়ার কথা বলে আরো পাঁচজনের কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন। এছাড়া বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারীকরণের কথা বলে দুই কোটি টাকা ও ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাঁচটি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা এমপিও ভুক্ত করার নামে আরো এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, যা তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
চাকরী দেওয়া ও স্কুল সরকারীকরণের নামে টাকা লোপাটের বিষয়ে শিক্ষক আবুল হাসান জানান, আমি এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। অন্যকেউ করে আমার উপর দোষ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বীমাকর্মী শারমিনের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনন্দ কিশোর সাহা জানান, কোন শিক্ষক এমন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রহন করা হবে।