কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : গাজীপুরের টঙ্গীর মাজার বস্তিতে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৬০ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় বস্তির বিভিন্ন ঘরে তল্লাশি চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র, মাদক ও মাদক সেবনের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (১ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযানে অংশ নেন সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য।

জানা গেছে, টঙ্গীর মাজার বস্তি ঘিরে মাদক কারবারের ভয়াবহ অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রায় প্রকাশ্যেই বস্তিটিতে মাদক কারবার চলে আসছে। বিষয়টি অনেকবার স্থানীয় থানায় জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরেজমিনে টঙ্গীর মাজার বস্তি ঘুরে ছোট ছোট অসংখ্য ঘর দেখা গেছে। ওইসব ঘরে মাদক বিক্রির পাশাপাশি বস্তিটিতে বিভিন্ন মাদক সেবনেরও ব্যবস্থা রয়েছে। পরিবহন শ্রমিকেরা এ স্পটের মূল ক্রেতা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। যৌথবাহিনীর এ অভিযান শেষে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করা হবে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
গাজীপুরের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রায়হানুল ইসলাম জানিয়েছেন, অভিযানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও রয়েছে। মাজার বস্তির মানুষ ছিনতাই ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে ৬০ জনের মতো মাদক কারবারিসহ বিভিন্ন চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আটক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মাদক ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। পুরো রমজানজুড়ে এমন অভিযান চলবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আমরা আজকে এ অভিযানটি পরিচালনা করি। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, আমরা বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছি। সেই সঙ্গে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র যেগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়, সেগুলো উদ্ধার করেছি। চিহ্নিত বেশ কিছু সন্ত্রাসী এবং মাদকসেবী লোকজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বেশ কিছু মাদকদ্রব্যসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র জব্দ করেছি। সেগুলো আমরা আইনগতভাবে নিষ্পত্তি করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘রমজান মাস ঘিরে এই এলাকার আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে আমরা ধারণা করছিল। সে কারণেই আজকের আমাদের এই অভিযান। এ অভিযানের প্রেক্ষিতে আমাদের বেশ কিছু নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে। টাকাগুলো গণনা চলছে, গণনা শেষ হলে আমরা বলতে পারব। আজকের এই অভিযানে আমরা আনুমানিক ৬০ জনের মতো মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী এবং যারা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে লিপ্ত, চিহ্নিত, আমাদের তালিকাভুক্ত ছিল সেই সমস্ত লোকদের গ্রেপ্তার করেছি। এখানে থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদক উদ্ধার করেছি। গাঁজা, দেশীয় মদ, ইয়াবা থেকে শুরু করে করে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছি। জনজীবনে স্বস্তি না আসা পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’


