কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ই জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন ইলিশ ধরা ও বাজারজাত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে আসন্ন রমজান মাসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম এবং বিগত ৬ মাসে মন্ত্রণালয়ের কাজের অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘সামুদ্রিক জলসীমায়ও ইলিশ ও অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মৎস্য আহরণের ওপর প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সকল প্রকার মৎস্য নৌযান দিয়ে যেকোনো প্রকার মৎস্য ও চিংড়ি, কাঁকড়া, লবস্টার ইত্যাদি (ক্রাস্টাশিয়ান্স) আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এর ফলে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণ ১২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধির রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে সমন্বয় না থাকায় এই সময়কালটায় পার্শ্ববর্তী দেশের মৎস্যজীবীরা সুযোগ নিচ্ছে।’
মৎস্য আহরণকারী সংগঠন এবং মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ব্যান্ড পিরিয়ড সমন্বয় করার দাবি উত্থাপিত হয়ে আসছে জানিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, ‘এরই পরিপ্রেক্ষিতে মৎস্য অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও অন্যান্য অংশীজন এবং মৎস্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। কারিগরি কমিটি সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের স্থায়িত্বশীল আহরণ ও স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বঙ্গোপসাগরে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ মাছের ব্রিডিং পিরিয়ড এপ্রিল থেকে জুন মাস হওয়ায় ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মৎস্য আহরণ বন্ধ রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে সামুদ্রিক জলসীমায় ইলিশ ও অন্যান্য মাছের আহরণের নিষিদ্ধ কাল হচ্ছে ৫৮ দিন (১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন)।’
এছাড়া হাওরে দেশীয় মাছ সংরক্ষণে জন্য ১৫ মে হতে ১৪ জুন পর্যন্ত হাওরে পানি আসার পরিপ্রেক্ষিতে ২০ দিন বা সর্বোচ্চ ১ মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধকরণ বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে।
ফরিদা আখতার আরো বলেন, মাছের দাম এখনো বেশি। মৎস্যজীবী মাছ ধরার খরচ বেড়েছে। দাদন ব্যবসা বন্ধ করার চেষ্টা করছে সরকার। দাদন ব্যবসায়ীদের কারণে মাছের দাম নির্ধারণ করতে পারেন না মৎস্যজীবীরা। সরকারের ওপর আস্থা রাখুন। দাম কমাতে চেষ্টা করছে সরকার। এ সময় ভিজিএফ প্রকৃত মৎস্যজীবীদের দিতে তালিকা হালনাগাদ করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রবাসীদের ইলিশ পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, প্রবাসীরা ইলিশ পাঠানোর অনুরোধ করেছেন। আগামী মৌসুমে প্রাথমিক অবস্থায় সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসীদের জন্য ১১ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ সরবরাহ হবে। অর্থাৎ এ বছর আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এই ইলিশ সরবরাহ করা হবে।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে ইলিশ পাঠানো নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও গত সরকার দুর্গা পূজার সময়ে ভারতে ইলিশ দিতো। গতবার যখন দেয়া হবে না বলা হয়েছে, সেখানকার বাঙালিরা চেয়েছে। সরকার কিছু দিয়েছে। তবে এখনো সরকারের অবস্থান হলো এ ধরনের রপ্তানি করতে চাই না। একমাত্র যেখানে বাঙালিরা আছে, সেখানে দেবো। রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে ভারতসহ সব দেশেই ইলিশ পাঠানো হবে।