নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারের মাতারবাড়ী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।
অভিযোগ রয়েছে, আসামিরা বাদীর স্বাক্ষর জালিয়াতি এবং নথি পরিবর্তন করে নিজেদের নাম বাদ দিয়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের এই বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ।
২৩ জানুয়ারি আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে সরকারি কৌঁসুলি সিরাজ উল্লাহ জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণের পর আদালত এই নির্দেশ দেন।
অভিযোগের পটভূমি ২০১৪ সালে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রকল্পে ২৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে চিংড়ি ঘের এবং অন্যান্য স্থাপনা অধিগ্রহণের জন্য ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী এই দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে, অভিযুক্তরা জাল নথি ও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। দুদকের তদন্তে প্রমাণিত হয় যে, আসামিরা ১৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা তছরুপ করেছেন।
আসামিদের বিচারাধীন অবস্থা ২০১৭ সালে রুহুল আমিনের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানো হলেও পরবর্তীতে তিনি জামিনে মুক্ত হন। মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা নিয়ে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রশ্ন উঠেছে। সরকারি প্রকল্পের অর্থের এই ধরনের অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।