নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) অধীন শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা মূল্যের বই এখন থেকে আর বিদেশে ছাপানো হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
বুধবার (১ জানুয়ারি) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে পাঠ্যবইয়ের অনলাইন সংস্করণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বই ছাপানোর ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক স্বার্থের পরিবর্তে স্বচ্ছতা ও সুশৃঙ্খলটা বজায় রাখা হবে। উন্নতমানের কাগজ, ছাপা ও মলাট নিশ্চিত করে সব বই দেশেই ছাপানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ৫ জানুয়ারি প্রাথমিক ও দশম শ্রেণির সব বই, ১০ জানুয়ারি মাধ্যমিকের আটটি বই এবং ২০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই পাঠানোর চেষ্টা করব।’
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শুদ্ধি অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। মুদ্রণ শিল্পের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিগ্রস্তদের অনেককে বদলি করা হয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অনুরোধ করা হবে।
বই বিতরণের ক্ষেত্রে নানা বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগের বাজারমূল্যে বই ছাপানো হয়েছে। যারা এই কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে, তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে সরকারে যারা থাকবে, তাদের কাছে এই তালিকা হস্তান্তর করা হবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা জানান, দলীয় রাজনীতির নিরপেক্ষতা বজায় রেখে পাঠ্যবই পরিমার্জন করা হয়েছে। আগে নবম ও দশম শ্রেণিতে শুধু সাধারণ গণিত ও বিজ্ঞান পড়ানো হতো। এখন উচ্চতর গণিত ও বিজ্ঞানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
শিক্ষাসহ সব মন্ত্রণালয়ে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা আছে জানিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে মুদ্রণ শিল্পের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জড়িত হয়ে যারা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল তাদের অনেককে বদলি করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যারা দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের জন্য দুদককে বলা হবে।
অনুষ্ঠানে এই বছর প্রথম থেকে দশম শ্রেণির ৪১ কোটি বই দেশেই ছাপা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনটিসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান। তিনি বলেন, ‘মাত্র আড়াই মাসে ৪৪১টি বই পরিমার্জন করেছি। ছয় কোটি বই গেছে। চার কোটি ট্রাকে ওঠার অপেক্ষায়।’
উল্লেখ্য, গত ৫ আগষ্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করা হয়। সেই সঙ্গে বইয়ের পান্ডুলিপি সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়। সেসব কাজ শেষ করে বই ছাপানো শুরু করতে অনেকটাই দেরি হয়।
এবার ৪০ কোটির মত নতুন বই ছাপাচ্ছে সরকার। নতুন পাঠ্যবইয়ে অনেক বিষয়বস্তু সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। বেশ কিছু গদ্য, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা বা বিষয়বস্তু বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে স্থান পেয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিষয়বস্তুসহ নতুন কিছু গল্প-কবিতা। মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার ঘোষণাসহ ইতিহাসের বেশ কিছু বিষয়েও সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারতের জিনিউজের প্রতিবেদন বানোয়াট: প্রেস উইং
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
সচিবালয়ে আগুন লাগার কারণ জানাল তদন্ত কমিটি