তিমির বনিক, স্টাফ রিপোর্টার: এক প্রবাসীকে মামলার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নজরুল ইসলামকে বদলি করা হয়েছে। রোববার পুলিশ সদর দপ্তরের এক চিঠিতে তাকে ময়মনসিংহের পুলিশ সার্ভিস সেন্টারে বদলির কথা জানানো হয়।
থানা-পুলিশ ও অভিযোগের সূত্রের বরাতে জানা গেছে, উপজেলার গোবরখলা গ্রামের বাসিন্দা ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সুজাতুল হক ভূঁইয়া গত ২৬ নভেম্বর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার আগের দিন ওসি মুঠোফোনে যোগাযোগ করে সুজাতুলকে থানায় এসে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। ওসি ফোনে বলেন, সুজাতুলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আছে। তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এসব শুনে সুজাতুল তার এক আত্মীয়কে থানায় পাঠান। তখন ওসি ওই ব্যক্তিকে বলেন, তাদের খুশি না করে চুপিচুপি বিদেশ যাবেন, তা মেনে নেওয়া যাবে না। এ কথা শুনে সুজাতুল ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন ওসি দুই লাখ টাকা স্থানীয় এক বিএনপি নেতার কাছে দিতে বলেন। ওসির কথামতো সুজাতুল তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের এক লোককে দিয়ে দুই লাখ টাকা দেন দেলোয়ার হোসেন ওরফে কবির (৪০) নামের বিএনপির ওই নেতাকে। তিনি চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
এদিকে সুজাতুল হক যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে ২ ডিসেম্বর পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার রেজাউল হক চুনারুঘাট থানার ওসির কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চান। তখন ওসি তাকে বলেন, দেলোয়ার তার নাম ভাঙিয়ে এ টাকা নিয়ে থাকতে পারেন। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ৭ ডিসেম্বর রাতে দেলোয়ারকে তার বাড়ি থেকে আটক করে চুনারুঘাট থানা-পুলিশ। তবে পুলিশ তাকে চাঁদাবাজির অভিযোগ না দিয়ে পরদিন হবিগঞ্জ আদালতে ৫৪ ধারায় হাজির করেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।
অপর দিকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহিদুল মুন্সিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে সেই তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা হয়নি। এমন অবস্থায় মোহাম্মদ নজরুল ইসলামকে ময়মনসিংহের পুলিশ সার্ভিস সেন্টারে বদলি করা হয়। হবিগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (চুনারুঘাট–মাধবপুর সার্কেল) এ কে এম সালিমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে সুজাতুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘বদলি তো শাস্তি হতে পারে না। আমি ওসির শাস্তি দাবি করি।’