কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাল-সবুজের পতাকার স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ”টুইট ও ফেসবুক পোস্ট” বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার জন্য চরম অবমাননার শামিল’ বলে মন্তব্য কেরেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘ভারতের ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘মুক্তিযুদ্ধকে’ ভারতের যুদ্ধ হিসেবে তুলে ধরেছেন। সেইসঙ্গে পুরো পোস্টে বাংলাদেশের নাম একবারের জন্যও উল্লেখ করেননি। একই দিনে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ‘মুক্তিযুদ্ধে’ ইন্দিরা গান্ধীর সাহসিকতাপূর্ণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিজয়ী হয় বলে বিতর্কিত মন্তব্যে বাংলাদেশকে চরম অবজ্ঞা করা হয়েছে যা মোটেও শুভ লক্ষন নয়।’
তারা বলেন, ‘ভারতের মনে রাখতে হবে, মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত ছিল শুধুমাত্র মিত্র, এর বেশি কিছু নয়। বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেসের নেত্রীর বক্তব্য এ দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার শামিল। তাদের এই মন্তব্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং অষন্ডতার প্রতি চরম অবমাননা ছাড়া অন্য কিছুই নয়।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে ভারত নিজেদের অর্জন হিসেবে দাবি করা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অষন্ডতাকে অস্বীকার করা। লাখ শহীদ ও লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ছিল বাংলাদেশের বিজয়ের দিন। ভারত ছিল এই বিজয়ের সারথি বা মিত্র, এর বেশি অন্য কিছুই নয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল বিশ্বের সকলেই তা জানে। ইতিহাস তাই প্রমান করে। তারপরও তাদের মন্তব্য বাংলাদেশের অস্ত্বিই উপেক্ষিত।’
তারা বলেন, ‘ভারতসহ বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সাথেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক হতে হবে সম্মানের-সমতার। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের এই সংগ্রামকে ভিন্নভাবে দেখা উচিত নয়। একটি জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও মর্যাদার সঙ্গে দেখা উচিত। বাংলাদেশের বিজয় নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেত্রীর বক্তব্য বন্ধুসুলভ মনোভাবের প্রকাশ নয়।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে যথার্থভাবে মূল্যায়ন করে না, গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে না, তা আবারো প্রমানিত হলো নরেন্দ্র মোদি ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধির পোস্টের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল বাংলাদেশের জনগন। প্রতিবেশী হিসাবে ভারত তাতে সহায়তা করেছে। এজন্য বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ। ভারতকেও বাংলাদেশের অবদানকে যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে ভারত তার আচরণ পরিবর্তন না করলে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তার বিচরণ ক্ষীণ হয়ে যেতে পারে।’