আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতার অভিযোগে স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় বিক্ষোভ করেছে লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে শনিবার (৯ নভেম্বর) রাস্তায় নেমে আসেন বিক্ষোভকারীরা। তারা আঞ্চলিক প্রধান কার্লোস মাজোনের পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন, ‘আমরা কাদায় মাখা, আর তোমরা রক্তে রাঙা’।
স্পেনের বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভ্যালেন্সিয়ার রাস্তায় প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। তাদের দাবি, কর্তৃপক্ষ বন্যার পূর্বাভাস দিতে দেরি করেছিল, যার ফলে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষতি হয়েছে।
গত অক্টোবর মাসে ভ্যালেন্সিয়া এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৮০ জন। এই বিপর্যয়ের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে জনগণ রাস্তায় নেমে আসে।
বিক্ষোভের শেষের দিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে প্রতিবাদকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। বিক্ষোভের সময় ভ্যালেন্সিয়া সিটি হলের সামনে কাদা ছোড়া হয় এবং প্রতিবাদকারীরা চেয়ার ও অন্যান্য বস্তু নিক্ষেপ করতে থাকে।
শহরটির মেয়র মারিয়া জোসে কাটালা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাঙা জানালার ছবি ও একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যেখানে আগুন লাগানোর চেষ্টার দৃশ্য দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘ভাঙচুর কোনো সমাধান নয়’।
গত সপ্তাহে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে জনগণের তোপের মুখে পড়েন স্পেনের রাজা ও রানি। তাদের গায়ে কাদা ও অন্যান্য বস্তু নিক্ষেপ করে ক্ষুব্ধ জনতা। একই ঘটনা ঘটে প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের ক্ষেত্রেও। তবে তাকে দ্রুত সেখান থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বিক্ষোভের মুখে আঞ্চলিক প্রধান কার্লোস মাজোন তার পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে যথাযথ পূর্বাভাস না পাওয়ায় দুর্যোগ মোকাবিলায় তারা প্রস্তুতি নিতে পারেননি। স্থানীয় একজন কাউন্সিলরও স্বীকার করেছেন যে, মোবাইল ফোনে সতর্কবার্তা পাঠানোর ব্যবস্থা সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না।
বিক্ষোভের অন্যতম আয়োজক আন্না অলিভার অভিযোগ করে বলেন, এত মানুষের দুর্ভোগের পরেও সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা দুর্বল ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আমাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে রাস্তায় নেমেছি।
বিক্ষোভের সময় হওয়া ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়েছে ভ্যালেন্সিয়া সিটি কাউন্সিলও। তাদের মতে, বিপর্যয়ের পরিসর বোঝার জন্য ধৈর্য ও সহযোগিতা প্রয়োজন, ভাঙচুর নয়। সূত্র: বিবিসি