নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য দেওয়া হবে। হাতে লেখা কার্ডে আর পণ্য দেওয়া হবে না।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আঞ্চলিক কার্যালয়ে রমজান উপলক্ষে আগাম প্রস্তুতি বিষয়ক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবীর।
এসময় টিসিবির এ মুখপাত্র বলেন, টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ড নিয়ে বর্তমানে কিছু অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। ফ্যামিলি কার্ডের এইসব সমস্যা দূর করার জন্য স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড করা হচ্ছে, যেন এক পরিবারে এক ব্যক্তির বেশি পণ্য না পায়। এ পর্যন্ত ৫৭ লাখ স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ডিলারদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখন ডিলার নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ভবিষ্যতে ডিলারের প্রয়োজন হলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, তেল, ডাল, চিনির পাশাপাশি খেজুর ও ছোলা ঢাকা ও অন্য সিটি করপোরেশন এলাকায় দেওয়া হবে। ছোলা ও খেজুরের জন্য এরইমধ্যে চুক্তি হয়ে গেছে। জানুয়ারির ভেতর পণ্য টিসিবির গুদামে চলে আসবে।
তিনি বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, সেসবেরও প্রস্তুতি নেওয়া শেষ। রমজানে পণ্যের কোনো সংকট হবে না।’
বর্তমানে স্থানীয় প্রতিনিধিরা নিজ নজ এলাকায় না থাকায় পণ্য সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে ডিসি অফিস ও সিটি করপোরেশনে চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও জানান টিসিবির মুখপাত্র।
হুমায়ুন কবির বলেন, বিগত সরকারের আমলে ফ্যামিলি কার্ডে যে ঝামেলা ছিল তার সমাধানে জেলা প্রশাসককে চিঠি লেখা হয়েছে। বর্তমানে ১ কোটি পরিবারকে দেওয়ার পরও সরকারের নির্দেশে ঢাকায় ৫০টি স্পটে এবং চট্টগ্রামে ২০টি ট্রাকে পণ্য দেওয়া হচ্ছে। দরকার হলে এর পরিমাণ আরো বাড়বে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, টিসিবি বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নের জন্য প্রতি মাসে ২০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল, ২ কোটি লিটার ভোজ্য তেল, ১০,০০০ মেট্রিক টন চিনি এবং পবিত্র রমজানের সময় ১০,০০০ মেট্রিক টন ছোলা, প্রায় ১,৫০০ মেট্রিক টন খেজুর, এছাড়াও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আমদানির মাধ্যমে সারা দেশে পেঁয়াজ ও আলু বিক্রয় করে থাকে।
এই বিশাল কর্মযজ্ঞ পালনের জন্য টিসিবির গুদামগুলোতে সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলোসহ প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
টিসিবির দায়বদ্ধতা হলো, প্রতি মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশিত পণ্যসমূহ স্থানীয় ও সম্ভব হলে বৈদেশিক বাজার থেকে ক্রয় করে ডিলারদের নিকট পৌঁছে দেয়া। এরপর বন্টন ও মনিটরিংসহ সকল দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের উপর ন্যাস্ত থাকে। টিসিবির বর্তমান ডিলার সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার ২৫০ জন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
তিনি আরো বলেন, ১ কোটি কার্ডধারীদের পণ্য প্রদানের পাশাপাশি বর্তমানে টিসিবি গার্মেন্টস শ্রমিকদের পণ্য প্রদানের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয় ও বিজিএমই এর সঙ্গে কাজ করছে। আসন্ন পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে টিসিবি বৈদেশিক আমদানি ও স্থানীয় ক্রয়ের মাধ্যমে পণ্য সংগ্রহের আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করছে বলে জানান তিনি।