মোঃ শরিফ উদ্দিন, শেরপুর জেলা প্রতিনিধি: শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে শিক্ষার্থী শারদুল আশিস (২২) নিহতের ঘটনায় সাবেক হুইপ, দুই সংসদ সদস্যসহ ৮৭ জনের নামে হত্যা মামলা হয়েছে।
নিহত শারদুলের বাবা ছোহরাব হোসেন বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় শেরপুর সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিউর রহমান, শেরপুর-১ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছানুয়ার হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমানসহ ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৩০০-৪০০ জনকে।
নিহত শারদুল আশিস (সৌরভ) ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নের জড়াকুড়া গ্রামের ছোহরাব হোসেনের ছেলে। তিনি শেরপুরের ডা. সেকান্দর আলী কলেজের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে প্রশাসনের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে তিনি মারা যান।
মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- শেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া, ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, নকলা পৌরসভার সাবেক মেয়র হাফিজুর রহমান, নালিতাবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, সদরের চরপক্ষীমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আকবর, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুন্নাহার কামাল, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল আলিম, আনোয়ারুল হাসান, কানু চন্দ্র চন্দ, দেবাশিস ভট্টাচার্য ও মানিক দত্ত, জেলা জাসদের সভাপতি মনিরুল ইসলাম, সাবেক পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ও গাড়িচালক হারুন মিয়া।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৪ আগস্ট বিকেলে শেরপুর শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মিছিলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া দেন ও গুলি ছোড়েন। শহরের খরমপুর এলাকায় একপর্যায়ে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে কলেজছাত্র শারদুল আশিস মারা যান। পরে তাঁর লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়।
মামলার বাদী ছোহরাব হোসেন এ ঘটনার জন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। একই দিনে প্রশাসনের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে আরেক কলেজছাত্র মাহবুব আলম নিহত হয়েছেন বলে মামলায় উল্লেখ করেন তিনি।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মামলার কোনো আসামি এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি।