আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের হিমালয় অঞ্চলের ছোট শহর জোশীমঠ ফেটে চৌচির। চার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে। উত্তরাখণ্ড রাজ্যের এ শহরটিতে ৪৫ হাজার ভবনের মধ্যে ৬৭০টিতেই ফাটল দেখা দিয়েছে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং-এর দুই বছরের সমীক্ষায় দেখা গেছে, জোশীমঠ ও এর আশেপাশের এলাকা প্রতি বছর সাড়ে ছয় সেন্টিমিটার বা আড়াই ইঞ্চি করে দেবে যাচ্ছিল।
দেহরাদূনের সরকারি সংস্থা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং-এর এই শহরকেন্দ্রিক সমীক্ষার প্রতিবেদন মঙ্গলবার প্রকাশ পেয়েছে। এতে বলা হয়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত সংগ্রহ করা স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যায়, পুরো এলাকাটি ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে। শুধু জোশীমঠ নয় এর আশপাশের এলাকাগুলোও ঝুঁকিতে রয়েছে।
মন্দিরের শহর বলে পরিচিত জোশীমঠ। এ বছর চরম সংকটময় মুহুর্ত তৈরি হয়েছে সেখানে। শহরটির ভবন, রাস্তাঘাট সবখানে দেখা দিয়েছে ফাটল। এর পাশের আরও একটি শহরেও দেখা দিয়েছে ফাটল। জোশীমঠের স্থানীয়রা ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন বা এনটিপিসির নিকটবর্তী তপোবন প্রকল্পকে দায়ী করছে এমন খারাপ পরিস্থিতির জন্য।
কিন্তু তার পরেও কেন্দ্রীয় সংস্থা এনটিপিসির তপোবন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য সুরঙ্গ খোঁড়ার কাজ বন্ধ করা হয়নি। পাহাড়ের ভেতরে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করার কাজও চলছে।
ফাটল ঠেকাতে না পেরে পুরো শহরটি এখন খালি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলো ভাঙা শুরু হয়েছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ এ বিষয়ে তাদের আগে কিছু জানানো হয়নি।
উত্তরাখণ্ডের সংসদ সদস্য ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী অজয় ভাটকে পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, লোকেরা কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে তাদের বাড়ি তৈরি করেছে কিন্তু এখন তাদের ছেড়ে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের অগ্রাধিকার হলো সবাইকে নিরাপদ রাখা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্রমাগত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলেও জানান তিনি।
এ বিপর্যয় শুধু জোশীমঠের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। কর্ণপ্রয়াগেও, জোশীমঠের প্রবেশদ্বার হিসাবে দেখা একটি শহরে গত কয়েক মাসে অন্তত ৫০টি বাড়িতে বিশাল ফাটল দেখা দিয়েছে। সূত্র: এনডিটিভি