October 8, 2024 - 1:31 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeসারাদেশ ও রাজনীতিসারাদেশসাতক্ষীরায় সহিংসতায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ নিহত ১৪

সাতক্ষীরায় সহিংসতায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ নিহত ১৪

spot_img

শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সদ্য বিদায়কৃত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরে সহিংস ঘটনায় সাতক্ষীরার আশাশুনি ও সদর উপজেলায় পৃথক তিনটি ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাকিরসহ ১৪ জন নিহত হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে ৯ জন আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী। বাকীরা বিএনপি-জামায়াতসহ বিক্ষুদ্ধ জনতা। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে আরও ১০/১২ জন।

গত সোমবার ও মঙ্গলবার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের নাকনা এবং সদর উপজেলার বৈকারী ও মৃগিডাঙ্গা গ্রামে পৃথক পৃথক ঘটনায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ আহতদেরকে সাতক্ষীরা সদর ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন- আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাকনা গ্রামের শেখ জাকির হোসেন (৫৩), একই গ্রামের শেখ শাকের (২২), শেখ জাহাঙ্গীর (৪৮), শেখ আশিক (৩৩), লস্করী খাজরা গ্রামের শাহিন আলম (২২), একই গ্রামের সজীব (২২), কুড়িকাউনিয়া গ্রামের হাফেজ আনাস বিল্লাহ (২১), একই ইউনিয়নের কল্যানপুর গ্রামের আদম আলী (২৩), হিজলিয়া গ্রামের আলমগীর হোসেন (১৬) এছাড়া সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী ইউনিয়নের বৈকারী গ্রামের আসাফুর রহমান (৬০)। একই উপজেলার মৃগিডাঙ্গা গ্রামের তৌহিদ ইসলাম (৩০), সাইফুল ইসলাম (২৫), বিএনপির কর্মী জাহিদ হোসেন (২৮) ও ফারুক হোসেন (৩৫)।

প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আবু দাউদ ঢালী জানান, গত সোমবার কয়েকশ’ বিক্ষুদ্ধ জনতা মিছিল নিয়ে নাকনা গ্রামের জাকির চেয়াম্যানের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তার বাড়িতে ইট পাটকেল ছোড়ে। এক পর্যায় বিক্ষুদ্ধ জনতা জাকির চেয়ারম্যানের বাড়ির গেট ভেঙ্গে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে জাকির বাড়ির দোতালা থেকে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১০/১২ জন আহত হয়। এ সময় ক্ষুদ্ধ জনতা তার বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। গুলিবিদ্ধ আহতদের চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে জামায়াত কর্মী হাফেজ আনাস বিল্লাহ, আদম আলী ও আলমগীর মারা যান। পরে তাদের মরদেহ গ্রামে ফিরিয়ে আনলে বিক্ষুদ্ধ জনতা জাকিরের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে বিক্ষুব্ধ জনতা জাকিরের বাড়িতে ঢুকে তাকেসহ তার সাথে থাকা শাকের, জাহাঙ্গীর, শাহিন আলম, সজীব ও আশিককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মেরে ফেলে। এসময় তারা বাড়িতে থাকা জাকিরের স্ত্রী ও মেয়েদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়। চেয়ারম্যান আরো জানান, মঙ্গলবার সকালে নিহতদের মরদেহগুলি শনাক্ত করা হয়েছে।

আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিশ্বজিত অধিকারি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী গ্রামে দূর্বৃত্তরা আসাফুর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করে। অপরদিকে, সদর উপজেলার মৃগিডাঙ্গা গ্রামে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ কর্মী তৌহিদ ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, বিএনপির কর্মী জাহিদ হোসেন (২৮) ও ফারুক হোসেন নিহত হন। বৈকারি ইউপি চেয়ারম্যান আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষুদ্ধ জনতা বেশ কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। একই সাথে তারা সাতক্ষীরা সদর থানা, ট্রাফিক অফিস ও শ্যামনগর থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

অপরদিকে, সাতক্ষীরা কারগার থেকে যে সমস্ত আসামীদের বিক্ষুদ্ধ জনতা তালা ভেঙে বের করে নিয়ে গিয়েছিল তারা অধিাংশই আবারো স্ব ইচ্ছায় কারাগারে অত্নসমর্পন করছেন বলে কারা সূত্রে জানা গেছে।

এ দিকে সাতক্ষীরায় স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন। দোকান-পাট, ব্যাংক,অফিস-আদালত খোলা ছিল। সবধরনের যানচলাচল ছিল স্বাভাবিক। এদিকে, শান্তিশৃংখলা বাজায় রাখতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চলছে মাইকিং।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ