গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় ভাই-বোনের পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা মেটাতে ১০ শতাংশ জমি দাবি কোনাবাড়ি থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। এমন নাটকীয়তা এবং বাঁধার কারণে প্রাপ্য ওয়ারিশ সম্পত্তি ভোগ দখলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন দুই বোন।
ভুক্তভোগী দুই বোন রাহেলা ও রাহিমা জানান, তিন ভাই বোনের মধ্যে বাবুল হোসেন তাদের বড়। তারা কোনাবাড়ী আমবাগ পশ্চিমাপাড়া ডালাই মোড় এলাকার মৃত ফালু মিয়ার সন্তান। গত ১৯৮৮ সালে তাদের বাবা এবং ২০১৯ সালে তাদের মা মারা যান। এর পর থেকে দুই বোন রাহেলা ও রাহিমা তাদের ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া কোনাবাড়ীর আমবাগ পশ্চিমপাড়া সাকিনস্থ বাঘিয়া মৌজার এসএ-৫২৪ নং খতিয়ানের ২৬৩ নং দাগে ৩৫০ এবং ২৬৪ নং দাগে ১৯ শতাংশসহ মোট ৩২৪ শতাংশের কাতে নালিশী সম্পত্তি ৫৪ শতাংশ এবং এসএ দাগ নং- ২৫৭, খতিয়ান নং-৬০৫ এর মোট ৩৫ শতাংশের কাতে নালিশী সম্পত্তি ১৭.৫০ শতাংশের খালি জায়গা ভোগ দখল করে আসছিলেন। পরবর্তীতে তাদের মোটা সম্পত্তি ৭১.৫০ শতাংশের ৫৪ শতাংশ দখলকৃত জায়গা ভাড়া দেন। কিন্তু কিছু দিন যাবত তাদের বড় ভাই বাবুল হোসেন, বোন রাহেলা ও রাহিমার ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া ওই সম্পত্তি দখল করার পায়তারা করে আসছেন। এমনকি সম্পত্তি ছেড়ে দিতে তাদেরকে নানা ধরনের হুমকি-দামকি দিচ্ছেন। পরবর্তীতে বিষয়টি কোনাবাড়ী থানা পুলিশেকে জাননানো হয়। প্রথম অবস্থায় থানার ওসি সব ঘটনা শুনে উভয় পক্ষকে নিয়ে মিমাংসার জন্য বসেন। সেখানে মিমাংসা সিদ্ধান্ত হলেও ভাই বাবুল হোসেন তা মানেননি।
এবিষয়ে আবার পুলিশকে অবগত করা হলে পুলিশের পরামর্শে রাহেলা ও রাহিমা তাদের তাদের ভাগের পৈত্রিক জমিতে ইটের বাউন্ডারি দেয়ার তৈরী করে। এরই মধ্যে গত ২৫ জুলাই ভাই বাবুল হোসেন বাদী হয়ে আদালতে মোকাদ্দমা নং-৬০৩/২৪ দায়ের করেন। পরে ওই জমিতে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। কোনাবাড়ী থানা পুলিশ গত ২৮ জুলাই বাবুল হোসেনসহ তার দুই বোন রাহেলা ও রাহিমাকে আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানিয়ে দেন। কিন্তু ভাই বাবুল হোসেন আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ২৯ জুলাই রাতে ওই সম্পত্তিতে স্থাপিত প্রাচীর ভেঙ্গে অনুপ্রবেশ করেন। এর আগে কোনাবাড়ী থানা পুলিশের সাথে বাবুল হোসেনের যোগাযোগ হয়। এতে পুলিশের আচরন পরিবর্তন হতে থাকে। পরবর্তীতে কোর্টের আদেশ অমান্যের বিষয়টি থানা পুলিশকে একাধিকবার জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি। এখন পর্যন্ত এবিষয়ে সংক্রান্তে তাদের কোন অভিযোগ কিংবা জিডি আমলে নেয়নি কোনাবাড়ী থানা পুলিশ। তাদের ওয়ারিশ সম্পত্তি দখল এবং হুমকি-দামকির বিষয়ে থানা পুলিশের কাছে একাধিক বার গিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী দুই বোনের।
পুলিশের এরকম নাটকীয় মোড় খোঁজতে গিয়ে সংবাদকর্মীর হাতে আসে একটি গোপন অডিও রের্কডিং। এতে ভাই বাবুল হোসেনকে বলতে শোনাযায় কোনাবাড়ী থানার এসআই মোশারফ জায়গা দখল করে দেয়ার জন্য ওই সম্পত্তি থেকে ১০ শতাংশ জমি দাবি করেছেন।
জানা যায়, ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া বোনদের সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টাকারী বড় ভাই বাবুল হোসেন কোনাবাড়ী থানা বিএনপি’র তালিকাভুক্ত নেতা। জমি সংক্রান্ত এবিষয়ে বিএনপি নেতা বাবুল হোসেন ও কোনাবাড়ী থানার ওসি কেএম আশরাফ এবং এসআই মোশারফ পরস্পরে যোগাযোগ রয়েছে।
ভাই বাবুল হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওনাদেরকে সম্পত্তি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। ২৫৭ দাগ থেকে ২৬৪ দাগ থেকে ২১৮ দাগ থেকে। তিনি ২৬৩ এবং ৬৪ দাগ নিয়েছেন। কিন্তু তার বোনেরা সকল দাগ থেকে সম্পত্তি দাবি করছে। তাই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। একথা বলেই তিনি দূরে আছেন কথা বোঝাচ্ছেনা বলে ফোনটি কেটে দেন। পরবর্তীতে আবার ফোন দেয়া হলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে আবারো ফোন কেটে দেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী থানার ওসি কেএম আশরাফ উদ্দিন বলেন, দুই বোন রাহেলা-রহিমাকে কোর্টে মামলা করার পরার্মশ দেয়া হয়েছে। জমি সংক্রান্ত কোন বিষয়ে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে না। কে ১০ শতাংশ জমি চেয়েছে তা জানা নেই। বাহিরে পুলিশের নামে অনেকেই অনেক কথা বলে।
এসআই মোশাররফের সাথে কথা হলে তিনি ১০ শতাংশ জায়গা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, কোর্টে অর্ডার উভয় পক্ষকে জানানো হয়েছে। দেয়াল ভাঙ্গার বিষয়টি কোর্টকে জানানো হবে।