স্পোর্টস ডেস্ক : ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের আগের ম্যাচে জর্জিয়াকে হারানোর পর তুরস্ককে নিয়ে যথেষ্ট সাবধানি হয়ে নেমেছিল পর্তুগাল। তবে শনিবার (২২ জুন) জার্মানির ডর্টমুন্ডে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোদের জিততে একটুও অসুবিধা হল না। তুরস্ককে অনায়াসে ৩-০ হারিয়ে ইউরো কাপের প্রি-কোয়ার্টারের টিকিট নিশ্চিত করে ফেললেন রোনাল্ডোরা। দলের হয়ে গোল করেন বের্নার্দো সিলভা, সামেত আকায়দিন (আত্মঘাতী) এবং ব্রুনো ফের্নান্দেস।
অনায়াসে এই ম্যাচে তৃতীয় গোলটি করতে পারতেন রোনাল্ডো। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের পাস তুরস্কের এক ফুটবলারের গায়ে লেগে তাঁর সামনে এসে পড়েছিল। রোনাল্ডোর সামনে ছিলেন শুধু গোলকিপার আলতে বাইন্দার। রোনাল্ডোর সঙ্গে বাঁ দিক দিয়ে ছুটছিলেন ব্রুনো। রোনাল্ডোর কাছে নিজে গোল করার সব রকম সুযোগ থাকলেও তিনি নিঃস্বার্থ হয়ে ব্রুনোকে পাস বাড়িয়ে দেন। ব্রুনো ফাঁকা গোলে বল জালে ঠেলেন এবং রোনাল্ডোকে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন।
পর্তুগাল প্রথমার্ধেই দু’টি গোল করে ফেলেছিল। ছ’মিনিটেই তুরস্কের কাছে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল। তুরস্কের জেকি চেলিক লম্বা বল বাড়িয়েছিলেন পর্তুগালের বক্সে। কিন্তু দু’গজ দূর থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন কেরেম আকতুরকোগ্লু। পরের মিনিটেই রোনাল্ডোর হেড বারের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। পর্তুগাল ক্রমশ চাপ বাড়াচ্ছিল। বলের নিয়ন্ত্রণও ছিল তাদের পায়েই। বাঁ দিক থেকে বার বার আক্রমণে উঠছিলেন রাফায়েল লিয়াও। তবে গোলের মুখ খুলছিল না।
তা খুলে যায় ২২ মিনিটে। বাঁ দিক থেকে লিয়াওয়ের ক্রস ধরতে গিয়েও পারেননি রোনাল্ডো। তা যায় ফাঁকায় থাকা বের্নার্দোর কাছে। তিনি চলতি বলে বাঁ পায়ের শটে জালে জড়ান। বড় প্রতিযোগিতায় এটাই প্রথম গোল বের্নার্দোর। ২৮ মিনিটে আবার এগিয়ে যায় পর্তুগাল। এ বার দোষ পুরোটাই তুরস্কের রক্ষণের।
পর্তুগালের একটি আক্রমণ বিপক্ষের বক্সে পৌঁছনোর আগেই শেষ হয়ে যায়। ডিফেন্ডার আকায়দিন সেই বল পেয়ে পাস দিয়েছিলেন গোলকিপারকে। কিন্তু পাস দেওয়ার সময় দেখেনইনি গোলকিপার কোথায় রয়েছেন। বাইন্দার তত ক্ষণে বাঁ দিকে সরে এসেছিলেন। বল তাঁর ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে গোলের দিকে এগোতে থাকে। তুরস্কের আর এক ডিফেন্ডার ঝাঁপিয়ে সেই বল বার করলেও তা আগেই গোলে ঢুকে যায়।
দু’গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরেও আক্রমণ থামেনি পর্তুগাল। রোনাল্ডো নিজে দূর থেকে গোটা দুয়েক শট নেন। এর মাঝেই ভুয়ো ডাইভ দিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন লিয়াও। পরের ম্যাচে তিনি খেলতে পারবেন না। পর্তুগালের পজেশন সত্ত্বেও প্রথমার্ধে আর গোল হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে তুরস্ক বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করলেও কাজে লাগাতে পারেনি। ব্রুনোর গোলের পর তুরস্কের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। শেষের দু’টি গোলই তারা খেয়েছে রক্ষণের ভুলে। জর্জিয়ার বিরুদ্ধে যে আক্রমণাত্মক ফুটবল দেখা গিয়েছিল তাদের, তা পর্তুগালের বিরুদ্ধে খুঁজেই পাওয়া যায়নি।
শেষ ম্যাচে আগামী বুধবার (২৬ জুন) দিবাগত রাতে জর্জিয়ার মুখোমুখি হবে রোনালদো-ব্রুনোরা।