December 17, 2025 - 3:14 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeকর্পোরেট ভয়েসআবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক

spot_img

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসানএশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ (এপিজি) অব মানি লন্ডারিংয়ের মূল্যায়নে বাংলাদেশের অবনমন হয়নি। কোথায় বাংলাদেশ ভালো করল, কোথায় এখনো দুর্বলতা রয়ে গেছে, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা, খেলাপি ঋণসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। 

প্রশ্ন: এপিজির পূর্বাভাস অনুযায়ী মান অবনমন না হয়ে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী হলো। এটা কীভাবে হলো?
রাজী হাসান: এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ (এপিজি) অব মানি লন্ডারিং মূলত আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রণকারী আন্তর্দেশীয় সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) সুপারিশ পরিপালন করে কি না, তা দেখভাল করে। এর আগে আমাদের দ্বিতীয় পর্যায়ের মূল্যায়ন হয়েছিল, এবার হলো তৃতীয় পর্যায়ের। দ্বিতীয় পর্যায়ের মূল্যায়নে আমাদের কিছুটা ঘাটতি ছিল, কিছুদিন ধূসর (গ্রে) তালিকায় ছিলাম। ঘাটতি পূরণ করে সেটা থেকে আমরা তিন মাসের মাথায় বের হয়ে আসতে সক্ষম হই। তৃতীয় পর্যায়ের মূল্যায়নে আইনকানুন ও কাঠামোগত অবস্থান পরিপালন হলেও কার্যকরী পর্যায়ে কিছু দুর্বলতা ছিল। ১১টি ত্বরিত পদক্ষেপের (আইও) মধ্যে একটিতে শক্তিশালী, ছয়টি মধ্যম ও চারটি ছিল নিম্ন পর্যায়ে। কমপক্ষে দুটি আইও মধ্যম পর্যায় থেকে শক্তিশালী না করলে আবারও গ্রে তালিকায় যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তবে এপিজির বার্ষিক সভায় আমরা মধ্যম পর্যায়ে থাকা আইও-২ ও আইও-৯ শক্তিশালী অবস্থানে নিতে পেরেছি। এর মধ্যে ২ নম্বর মানদণ্ডটি মান নির্ণয়ে বিবেচ্য বিষয় হলো আন্তর্জাতিকভাবে সঠিক তথ্য আদান-প্রদান, আর্থিক গোয়েন্দা কার্যক্রম, সন্ত্রাসী ও তাদের সম্পদের বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ৯ নম্বর মানদণ্ডের মান নির্ণয়ে বিবেচ্য হলো সন্ত্রাসে অর্থায়ন তদন্ত ও অর্থায়নকারীকে আইনের আওতায় আনা।

প্রশ্ন: কী কারণে দুটি সূচকে উন্নতি করা সম্ভব হয়েছে, কোনো উদাহরণ কি আছে?
রাজী হাসান: বিদেশ থেকে যত আবেদন এসেছিল, তার সব উত্তর দেওয়া হয়েছে এবং যথাযথ উত্তর দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো দুর্বলতা ছিল না। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরত এনেছি, আবার টাকা ফেরতও পাঠিয়েছি। আমাদের আইনি কাঠামোর মধ্যেও কোনো ঘাটতি ছিল না। সবকিছু দেখেই তারা উন্নতি করেছে। প্রথম দিকে কয়েকটি দেশ ও সংস্থা এতে দ্বিমত পোষণ করলেও যথাযথ তথ্য উপস্থাপনের কারণে শেষ পর্যন্ত তারা উন্নতিতে মত দিয়েছে।

প্রশ্ন: এখনো তো অনেক দুর্বল জায়গা রয়ে গেছে, এসব উন্নতিতে কী সুপারিশ রয়েছে?
রাজী হাসান: বাংলাদেশে কোম্পানি নিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় ও এর প্রকৃত সুবিধাভোগী কারা তা চিহ্নিত করতে কিছু সুপারিশ করেছে এপিজি। এ ছাড়া আমাদের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব আর্থিক গোয়েন্দা তথ্য নেয়, তা কতটা ব্যবহার করে এবং বিএফআইইউর কাছে তারা কী পরিমাণ আর্থিক গোয়েন্দা তথ্য দেয়, তার স্বচ্ছতার সুপারিশ রয়েছে। এসবের ওপর আমরা সময়মতো প্রতিবেদন দেব। বর্তমান অর্জন ধরে রাখতে আমাদের কাজ করতে হবে, পরবর্তী মূল্যায়ন হবে আরও ছয়-সাত বছর পরে।

প্রশ্ন: এপিজির মূল্যায়নের ফলে বাংলাদেশ কী সুবিধা পাবে?
রাজী হাসান: মান উন্নতি করতে না পারলে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় চলে যেতাম। ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় গেলে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যে সমস্যার মধ্যে পড়তাম। আন্তর্জাতিক ব্যবসার ব্যয় বেড়ে যেত, বিদেশি বিনিয়োগ আসতে বাধা সৃষ্টি হতো। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বাধা তৈরি হতো। এখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য খরচ কমানোর পথ তৈরি হলো।

প্রশ্ন: রিজার্ভের অর্থ চুরিও একধরনের অর্থ পাচার, এ অর্থ আদায়ে সবশেষ অবস্থা কী?
রাজী হাসান: এপিজির সভায় আলোচনা হয়েছে যে ফিলিপাইনের অর্থ পাচার আইনে কিছু ঘাটতি আছে। সেখানকার ক্যাসিনো অর্থ পাচার আইনের মধ্যে নেই। এ জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি ডিসেম্বরে ফিলিপাইনে যাবে। ক্যাসিনোকে অর্থ পাচার আইনের মধ্যে আনতে কাজ করবে এপিজি। অর্থ চুরির বিষয়ে ইন্টারপোল কাজ করছে, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থাও কাজ করছে। ইতিমধ্যে কিছু অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়ে আদেশ পাওয়া গেছে। আমরা আশা করছি সময় লাগলেও পুরো অর্থ ফেরত পাওয়া যাবে।

প্রশ্ন: রাজনৈতিক উত্তাপ নেই, ব্যবসার পরিস্থিতিও স্বাভাবিক—এরপরও কেন খেলাপি ঋণ বাড়ছে?
রাজী হাসান: অতীতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক নীতিমালার কারণে অনেক ঋণ শ্রেণীকৃত হয়ে পড়েছিল। এসব ঋণ পুনঃ তফসিল করার পর আবারও খেলাপি হওয়া শুরু করেছে। যেসব ঋণ আগে থেকে খেলাপি ছিল, তাদের সুবিধা দিলেও সব নিয়মিত থাকতে পারেনি। তবে আমাদের তদারকি জোরদার করা হয়েছে, তাই নতুন করে দেওয়া ঋণ সহজেই খেলাপি হবে না। সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো।


 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ

মহান বিজয় দিবস আজ

কপোরেট সংবাদ ডেস্ক: মহান বিজয় দিবস আজ। বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন।...

আইসিএসবি’র কর্পোরেট গভর্নেন্স অ্যাওয়ার্ড পেলো ৪৩ প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে কর্পোরেট গভর্ন্যান্স প্রতিষ্ঠায় উৎকর্ষতা সাধন এবং কোম্পানির সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে ৪৩টি প্রতিষ্ঠানকে...

১৬ ডিসেম্বর জাতির অহংকার, আনন্দ আর বেদনার এক মহাকাব্যিক দিন: তারেক রহমান

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে শুরু হওয়া স্বাধীনতাযুদ্ধ ওই বছর...

নিজ বাড়িতে সস্ত্রীক খুন হলিউডের কিংবদন্তী অভিনেতা

বিনোদন ডেস্ক: নিজ বাড়ি থেকে উদ্ধার হলো হলিউডের কিংবদন্তী পরিচালক-অভিনেতা রব রাইনা ও তার স্ত্রী মিশেল সিঙ্গার রাইনার মরদেহ। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকালে মার্কিন...

ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজকে ৮ লক্ষ টাকা অনুদান দিল আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক

কর্পোরেট ডেস্ক: শীর্ষস্থানীয় শরীয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমের আওতায় ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজকে ৮ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছে।...

বিডি ল্যাম্পসের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিডি ল্যাম্পস লিমিটেডের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয় করে তা প্রকাশ করেছে। কোম্পানিটিকে ক্রেডিট রেটিং দিয়েছে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (ইসিআরএল)।...

শেখ হাসিনা-কামালের আমৃত্যু কারাদণ্ড বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার এক অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড...