বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশি কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতাকে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরে। সেখানে শুধু ববিতা অভিনীত সিনেমাই প্রদর্শিত হয়। তাকে দেওয়া হয় আজীবন সম্মাননা
টেক্সাসের রিচার্ডসন সিটির মেয়র বব ডুবের হাত থেকে ববিতা এ সম্মাননা গ্রহণ করেন। পাশাপাশি আরও একটি বিরল সম্মান দেওয়া হলো তাকে। উৎসবে তার সম্মানে ৫ আগস্টকে ‘ববিতা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। দিনটি ঘোষণা করেন ডালাসের মেয়র। প্রতি বছর ডালাসে দিনটি ‘ববিতা দিবস’ হিসাবে উদযাপিত হবে।
এ প্রসঙ্গে আমেরিকা থেকে ববিতা বলেন, ‘ববিতা দিবসের যাত্রা শুরুর মধ্য দিয়ে আমাকে এবং আমার প্রিয় বাংলাদেশকে যে সম্মাননা জানানো হলো তাতে সত্যিই আমি ভীষণ গর্বিত, ভীষণ আনন্দিত। এ সম্মান শুধু আমাকেই নয়, এ সম্মান বাংলাদেশকেও প্রদর্শন করা হয়েছে। সত্যি আমি কোনোদিন কখনো কল্পনা করিনি জীবনে এমন মুহূর্ত আসবে। জীবনে এমনই কিছু মুহূর্ত আসে যা জীবনের জন্য আশীর্বাদ হয়েই আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন প্রাপ্তিও যে জীবনে অপেক্ষা করছে তাও জানার বা বুঝার মধ্যে ছিল না। কিন্তু ৪ আগস্ট টেক্সাস সিটিতে আমাকে যে সম্মাননা জানানো হলো, যে সম্মান প্রদর্শন করেছেন সবাই এবং মেয়রের হাত ধরে সেখানে ববিতা দিবসের যে যাত্রা শুরু হলো তা যেন জীবনকে আরও পরিপূর্ণতা এনে দিয়েছে। জীবন যেন আরও অর্থবহ হয়ে উঠেছে। প্রতিটি মুহূর্তে প্রিয় বাংলাদেশকেই মনে পড়েছে। কারণ বাংলাদেশের জন্য, সেখানকার দর্শকের জন্যই আজ আমি ববিতা, যাকে নিয়ে নতুন এক দিগন্তের সূচনা হলো। অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা আয়োজকদের।’
বিশ্বে কোনো অভিনেত্রীকে নিয়ে দিবস ঘোষণা এটাই প্রথম।
মূলত জহির রায়হানের ‘সংসার’ চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে ববিতার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৮ সালে। সেখানে তিনি রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তার প্রাথমিক নাম ছিল সুবর্ণা। জহির রায়হানের ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করার সময় ববিতা নামে পরিচিতি পান তিনি।
বসুন্ধরা, লাঠিয়াল, গোলাপী এখন ট্রেনে, জন্ম থেকে জ্বলছি, মন্টু আমার নাম, দিপু নাম্বার টু, টাকা আনা পাই, স্বরলিপি, তিনকন্যাসহ অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে পরপর তিন বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়া আরও অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা নিজামুদ্দীন আতাউব একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এবং মাতা বি. জে. আরা ছিলেন একজন চিকিৎসক। বাবার চাকরি সূত্রে তারা তখন বাগেরহাটে থাকতেন। তবে তার পৈতৃক বাড়ি যশোর জেলায়। তার শৈশব এবং কৈশোরের প্রথমার্ধ কেটেছে যশোর শহরের সার্কিট হাউজের সামনে রাবেয়া মঞ্জিলে।
আরও্র পড়ুন:
রজনীকান্তের সিনেমা দেখতে চেন্নাই-বেঙ্গালুরুর অফিসে ছুটি ঘোষণা