স্পোর্টস ডেস্ক : ওপেনার রনি তালুকদারের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে জয় দিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের নবম আসর শুরু করলো রংপুর রাইডার্স। শুক্রবার শুরু হওয়া এবারের বিপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর ৩৪ রানে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে।
প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৬ রান করে রংপুর রাইডার্স। ৩১ বলে ১১টি চার ও ১টি ছয়ে ৬৭ রান করেন রনি। এই ইনিংস খেলার পথে বিপিএলে বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের মধ্যে মাত্র ১৯ বলে দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। জবাবে ৫ বল বাকী থাকতে ১৪২ রানে অলআউট হয় কুমিল্লা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক ইমরুল কায়েস।
মোহাম্মদ নাইমকে নিয়ে রংপুর রাইডার্সের ইনিংস শুরু করে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন রনি তালুকদার। ৪ ওভারে দলের রান ৪১এ পৌঁছে দেন তিনি। এসময় ৫টি চার ও ১টি ছয় মারেন রনি।
পেসার আশিকুজ্জামানের করা পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের প্রথম চার বলে চারটি বাউন্ডারি মারেন রনি। একই ওভারে বাউন্ডারি দিয়ে ক্যারিয়ারে অস্টম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রনি।
হাফ-সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংস বড় করার চেষ্টা করেছেন রনি। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের স্পিনার খুশদিল শাহর করা নবম ওভারের পঞ্চম বলে আউট হওয়ার আগে ৩১ বল খেলে ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৭ রান করেন ডান-হাতি ব্যাটার রনি। নাইম-রনি উদ্বোধনী জুটিতে ৫৩ বলে ৮৪ রান যোগ করেন ।
রনির আউটের পর পাকিস্তানের শোয়েব মালিকের সাথে রানের চাকা সচল রাখেন নাইম। তবে আফগানিস্তানের পেসার ফজলহক ফারুকির বলে বিদায় নেন নাইম। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৪টি চারে ৩৪ বলে ২৯ রান করেন তিনি। এরপর চার নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা। ১০ বলে ১২ রান করে স্পিনার মোসাদ্দেক হোসেনের শিকার হন রাজা।
অধিনায়ক নুরুল হাসানকে নিয়ে ২০ বলে ২৯ রান যোগ করে দলের রান দেড়শ পার করে আউট হন মালিক। ব্যক্তিগত ৩৩ রানে রান আউট হন এই ডান-হাতি ব্যাটার। ২৬ বল খেলে ১টি করে চার-ছক্কা মারেন তিনি।
শেষদিকে ১টি করে চার-ছয়ে নুরুল ১১ বলে ১৯ ও ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল ৬ বলে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৬ রানের সংগ্রহ পায় রংপুর। কুমিল্লার ফারুকি-মুস্তাফিজুর-খুশদিল ও মোসাদ্দেক ১টি করে উইকেট নেন।
১৭৬ রানের জবাবে ২৫ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন কুমিল্লার দুই ওপেনার সৈকত আলি ও লিটন দাস। চতুর্থ ওভারে লিটনকে ১০ রানে আউট করেন বাঁ-হাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান।
এরপর ব্যাট হাতে মারমুখী মেজাজে শুরু করেও ২টি চার ও ১টি ছয়ে ৯ বলে ১৭ রান করার পর রাজার বলে ফিরেন কুমিল্লার হয়ে খেলতে নামা ইংল্যান্ডের ডেভিড মালান। অন্য প্রান্তে সাবধানে খেলতে থাকা সৈকতকেও বোল্ড করে কুমিল্লাকে চাপে ফেলেন দেন রাজা। ২১ বলে ১৬ রান করেন সৈকত।
৫৭ রানে ৩ উইকেট পতনের পর কুমিল্লাকে খেলায় ফেরান অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ও মোসাদ্দেক হোসেন। চতুর্থ উইকেটে ৪৩ বলে ৫৮ রান যোগ করে দলের রান ১শ পার করেন তারা।
এমন অবস্থায় ইমরুলকে শিকার করে রংপুরকে দারুন এক ব্রেক-থ্রু এনে দেন আফগানিস্তানের পেসার আজমতুল্লাহ ওমরজাই। ২৩ বলে ৪টি চার ও ১টি ছয়ে ৩৫ রান করেন ইমরুল।
দলীয় ১১৫ রানে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে ইমরুলের আউটের পর রংপুরের হাসান মাহমুদ ও রবিউল হকের বোলিং দৃঢ়তায় ব্যাটিং ধ্বস নামে কুমিল্লা ইনিংসে। ২৭ রানে শেষ ৬ উইকেট হারায় কুমিল্লা। শেষ পর্যন্ত ১৯ দশমিক ১ ওভারে ১৪২ রানে গুটিয়ে যায় তারা। মোসাদ্দেক ১৫ ও জাকের আলি ১৯ রান করেন। রংপুরের হাসান ২০ রানে ৩টি, রবিউল-রাজা ২টি করে উইকেট নেন।