মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি: পাত্রী দেখতে গিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে নিখোঁজ হওয়া ৩ বন্ধুর হদিস মেলেনি ২০ দিনেও। পরিবার পরিজন রয়েছে দারুণ উদ্বেগ উৎকন্ঠায়। যোগাযোগ বিছিন্ন থাকায় জীবত আছে নাকি মারা গেছে তাও বুঝতে পারছে না নিখোঁজ হওয়া তিন বন্ধুর পরিবার।
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাড়াশি অভিযানে সন্দেহভাজন একজনকে আটক করেছে টেকনাফ থানার পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে মোবাইল।(তদন্তের স্বার্থে ধৃত ব্যক্তির পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে)।
এদিকে ধৃত ব্যক্তিসহ আরো কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে নিখোঁজ জমির হোসেন রুবেলের বোন৷ মামলাটি অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সরকারের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিখোঁজ তিন বন্ধুর পরিবার কক্সবাজার সদর মডেল থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে।
জানা যায় , ২৮ এপ্রিল জুমাবার দুপুরে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের মোহাম্মদ ইউছুপ, সদরের চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের জমির হোসেন রুবেল এবং ইমরান নামের তিন বন্ধু টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুর বিল এলাকায় বসবাস করা রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ শফির ছেলে হেলালের বাড়িতে পাত্রী দেখতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া থেকে সিএনজি যোগে টেকনাফ রওনা দেয়। প্রতিমধ্যে টেকনাফ পৌঁছার আগেই তাদের বহনকারী সিএনজি থামিয়ে একদল ডাকাত ইমরান, ইউছুপ, রুবেলকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাহাড়ে নিয়ে যায়। নিয়ে যাওয়ার ২ দিন পর তাদের হাত পা বেধে উপর্যপুরী নির্যাতন করে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে নির্যাতনেরভিডিও পাঠায় পরিবারের কাছে।
অসহায় দরিদ্র পরিবার গুলোর পক্ষে এতো টাকা মুক্তিপণ দেওয়া কোনো ভাবেই সম্ভব নয় জানিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চেয়ে বসে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকটি সংস্থা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও অপহৃতদের উদ্ধার করতে পারেনি । তবে তাদের এক বন্ধুকে সন্দেহভাজন আটক করেছে পুলিশ।
তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবদুল হালিম বলেন;সংগঠিত অপহরণের ঘটনায় ভিকটিমদের পরিবারের একজন থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলার সূত্র ধরে পুলিশ ইতিপূর্বে একজনকে আটক করেছে, তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মুঠোফোন। মুঠোফোন থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান ওসি। তাছাড়া পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন অফিসারের নেতৃত্বে ভিকটিমদের উদ্ধারের কাজ চালিয়ে আসছে পুলিশ।
ওসি আবদুল হালিম আরো বলেন,`তাদের বহনকারী সিএনজি চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যার বাড়িতে পাত্রী দেখতে আসার কথা তাদেরকেও খোঁজা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে অপহৃত জমির হোসেন রুবেলের ডিভোর্সপ্রাপ্ত স্ত্রীর ইন্দনে তাদের অপহরণ করা হয়েছে।
এদিকে দীর্ঘ ২০ দিনেও হদিস না পাওয়া উদ্বেগ উৎকন্ঠায় রয়েছে অপহৃত মোহাম্মদ ইউছুপের পরিবার। তার স্ত্রী শামসু নাহার তিন সন্তান নিয়ে চরম বেকায়দা পড়েছে। উপার্জন সক্ষম স্বামীর সন্ধান না পেয়ে বাকরুদ্ধ স্ত্রী -সন্তানরা। কথা হয় ইউছুপের স্ত্রী শামশু নাহারের সাথে, তিনি সন্তানদের দিকে চেয়ে হলেও স্বামীকে উদ্ধার করতে প্রশাসনের সহযোগিতা চান। জীবিত উদ্ধার করতে না পারলেও যেন মৃতদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন এ বিষয়ে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।