নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ২০২১-২২ অর্থবছরের আর্থিক হিসাবে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন নিরীক্ষক। যেখানে মজুদ পণ্য, গ্রাহকের কাছে পাওনা (দেনাদার), ডেফার্ড ট্যাক্স, স্থায়ী সম্পদ, অবন্টিত লভ্যাংশ, ট্যাক্স প্রদান, ব্যাংক হিসাবসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
নিরীক্ষক জানিয়েছে, প্রমাণাদির অভাবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দেখানো ৭ কোটি ৯১ লাখ টাকার দেনাদারের বিষয়ে তারা নিশ্চিত হতে পারেননি। এছাড়া কোম্পানি থেকে কোন বিক্রয় কেন্দ্র বা পার্টির কাছে টাকা পাওয়া যাবে, তার ঠিকানা দেওয়া হয়নি। যে পাওনা দীর্ঘদিন ধরে আদায় না হওয়ায় শঙ্কা তৈরী হয়েছে। কিন্তু তারা কোন প্রভিশনিং গঠন করেনি।
এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে মজুদ পণ্য দেখালেও প্রমাণাদির অভাবে তার সত্যতা পায়নি নিরীক্ষক। এছাড়া ২ কোটি ৬০ লাখ টাকার ওষুধ বিক্রি, ৮১ লাখ টাকার কাচাঁমাল ক্রয়, ২৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকার অগ্রিম প্রদান, ১৫ লাখ টাকার বিবিধ পাওনাদার এবং ৬০ লাখ টাকার অন্যান্য দায় হিসাবের প্রমাণাদি পায়নি।
সেন্ট্রাল ফার্মা কর্তৃপক্ষ সঠিক ডেফার্ড ট্যাক্স গণনা করেনি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। এছাড়া জমির পূণ:মূল্যায়নজনিত সারপ্লাসের উপরে ডেফার্ড ট্যাক্স গণনা করেনি।
কোম্পানিটিতে ৯ লাখ টাকার অবন্টিত লভ্যাংশ রয়েছে। তবে তা কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে হস্তান্তর করেনি।
কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ২০২২ সালের ৩০ জুন তারিখে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকার ট্যাক্স প্রভিশনিং দায় দেখিয়েছে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০০৭-২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ে ৯৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা আয়কর দাবি করে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু এ বিষয়টি সেন্ট্রাল ফার্মা কর্তৃপক্ষ এনবিআরের সঙ্গে সমাধান করেনি।
সেন্ট্রাল ফার্মার জনতার ব্যাংকের ঢাকা লোকাল অফিসে ২৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকার ঋণজনিত দায় রয়েছে। যা পরিশোধে ব্যর্থতার জন্য ব্যাংক খেলাপি দেখিয়েছে। যে ব্যাংকটি ৯ মাসে (জুলাই ২১-মার্চ ২২) ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা সুদ চার্জ করেছে। তবে ব্যাংকটি পরের ৩ মাসে সুদ চার্জ না করলেও সেন্ট্রাল ফার্মা সঞ্চিতি গঠন করেনি।
এদিকে সেন্ট্রাল ফার্মার জনতার ব্যাংকের ঢাকা লোকাল অফিসে ৩টি হিসাব রয়েছে। যেগুলো ট্যাক্স অথোরিটি লেনদেন অযোগ্য (ফ্রিজ) করে রেখেছে। তাদের দাবিকৃত ৯ কোটি ৩১ লাখ টাকার ট্যাক্সের জন্য ২০১৫ সালে এমনটি করে রেখেছে। তবে এখনো এ বিষয়টির কোন সমাধান বা উন্নতি হয়নি। যাতে কোম্পানি নগদে লেনদেন করছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া সেন্ট্রাল ফার্মার পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১১৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এরমধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদদের মালিকানা ৭৪.১১ শতাংশ।