চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) এর ভুয়া সিল, স্ট্যান্ডার্ড মার্ক ব্যবহার ও নামিদামি ব্র্যান্ডের মোড়ক নকল করেই বাজারে ৮ ধরনের খাদ্য পণ্য বিক্রি, বিতরণ ও বাজারজাতের অপরাধে ‘ফ্রেশওয়ে ফুড এন্ড বেভারেজ লিমিটেড নামক এক প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অথচ প্রতিষ্ঠানটির লোগোতে লেখা ছিলো ‘ফ্রেশওয়ে স্বাদ ও সু-স্বাস্থ্যের পথে’। এতে নিরাপদ মনে করে এই বেকারির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি কেক-বিস্কুট নামক ‘বিষ’ কিনে খাচ্ছে মানুষ।
সোমবার (০৩ এপ্রিল) বিকেলে কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা তোতার বাপের বাড়ী এলাকায় ওই প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন কর্ণফুলী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পিযুষ কুমার চৌধুরী।
একই সময়ে ওজনে কম দেওয়া ও মূল্য তালিকা হাল নাগাদ না করায় ব্রিজঘাটের মাংস ব্যবসায়ি শফি সওদাগরকে ওজন ও পরিমাপ আইনের ২৯ ধারায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ মোবাইল কোর্ট সহযোগিতায় ছিলেন বিএসটিআই এর ইন্সপেক্টর সজীব চৌধুরী, ফিল্ড অফিসার নুরে আলম ফিরোজ, সিএমপি কর্ণফুলী থানা পুলিশ ও আনসার সদস্য।
অভিযানে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার গোলাম মোস্তফা দুই বছর যাবত চরপাথরঘাটা এলাকায় মাত্র ৩/৪ টা রুমের স্যাঁতস্যাঁত পরিবেশে বিএসটিআই’র ভুয়া সিল মেরে মেরে মাসের পর মাস কেক বিস্কুটের ব্যবসা করছেন। এতে উপাদান একই হলেও বিভিন্ন বাহারি নামে খাদ্যপণ্য বাজারজাত করে আসছেন।
ম্যাজিস্ট্রেটের জব্দকরা এক গাড়ি পণ্যে দেখা যায়, মোড়কে লেখা বানানা কেক, চকো বাইট, ইকো টিফিন কেক, স্পেশাল সুইট টোস্ট, গোল্ডেন পিনাট, ইকো মাফিন কেক, পিনাট বিস্কুট, কলা টোস্ট। যা বাহারি প্যাকেটে করে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন।
বেকারির মালিক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমরা ব্যবসা শুরু করেছি দুই বছর হবে প্রায়। ম্যানেজার সব দেখেন। বিএসটিআই এর অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছি। এখনো সনদ পাইনি। তবে বাকি সব লাইসেন্স আছে। আমি এখন রাস্তায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যাচ্ছি। দেখি উনি কি বলেন।’ জানতে চাওয়া হয় বিএসটিআই এর কোন অনুমোদন পাননি কিন্তু সিল ও স্ট্যান্ডার্ড মার্ক কিভাবে লাগান প্যাকেটে। তখন উত্তর না দিয়ে চুপ করে ফোন লাইন কেটে দেন তিনি।’
বিএসটিআই চট্টগ্রামের এর ইন্সপেক্টর সজীব চৌধুরী বলেন, ‘ফ্রেশওয়ে ফুড এন্ড বেভারেজ লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানটি ভুয়া। এটার কোন অনুমোদন নেই। আবেদন করেই ব্যবসা শুরু করেছেন। তাই ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে ধরা পড়েছেন। স্যার দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।’
কর্ণফুলী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পিযুষ কুমার চৌধুরী বলেন, ‘যে সব বেকারি যথাযথ নিয়ম মেনে চলবে না তাঁদের বিরুদ্ধে বিএসটিআই টিমসহ অভিযান চালানো হবে। খাদ্য যদি মানসম্মত না হয়, তা মানবদেহের জন্য ‘বিষ’ হয়ে যায়। এতে শরীরে মারাত্মক রোগ সৃষ্টি হতে পারে। তাই ডিসি স্যারের নির্দেশে এসব অভিযান অব্যাহত থাকবে।’