জে, জাহেদ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থেকে ‘অপহৃত’ শিশু আবিদা সুলতানা আয়নীর (১০) গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (২৯ মার্চ) ভোরে নগরের পাহাড়তলী থানাধীন মুরগী ফার্ম আলম তারারপুকুর পাড় থেকে আবিদা সুলতানা আয়নীর (১০) মরদেহ চট্টগ্রাম মেট্টো পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) উদ্ধার করেন।
এর আগে গত ২১ মার্চ শিশুটি নিখোঁজ হয়। শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। এ ঘটনায় মোহাম্মদ রুবেল নামের স্থানীয় ওই তরকারি বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক শরমিন জাহানের আদালতে বিড়ালছানা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে আবিদা সুলতানা আয়নীকে অপহরণ করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন শিশুটির মা বিবি ফাতেমা।
মামলাটি আদালত পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এজাহার হিসেবে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল, শিশু আবিদা সুলতানা আয়নী নগরের পাহাড়তলী কাজীর দীঘি সাগরিকা রোড এলাকার একটি বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী।
মা পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বাবা একই পেশায় ঢাকায় কর্মরত। গত ২১ মার্চ স্কুলের যাওয়ার পথে তাকে বিড়ালছানা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে স্থানীয় তরকারি বিক্রেতা মো. রুবেল অপহরণ করে নিয়ে যায়।
আবিদার মা বিবি ফাতেমা বলেন, ‘মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর থানায় গিয়েছিলাম। পুলিশ যদি আমার মেয়েকে খুঁজতো-এই ঘটনা ঘটতো না। আমি বার বার এসআই দুলালকে বলেছি, রুবেলকে সন্দেহ হয়। সে আমাকে দেখলে হাসে। এসআই দুলাল আমার কথার গুরুত্ব দেয়নি। আমি মেয়েকে অনেক খুঁজেছি। রুবেলকে সন্দেহ করেছি। তারা আমার মেয়েকে জ্বিন চালান দিয়ে নিয়ে আসবে বলে ঠাট্টা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মেয়ের অনেক শখ পূরণ করতে পারিনি। তার কাপড়গুলো কে পড়বে? আম্মু বেতন পেলে আমাকে ৫০ টাকা দিও। আব্বু আমি কুরআন নিয়েছি। আমার জন্য দোয়া করিও, তাড়াতাড়ি যেন শেষ করতে পারি। রুবেল আমার মেয়েকে কুরআন পড়তে দেয় নাই। সবাইকে বলেছি, আমার বাচ্চাকে খুন করেছে। থানার এসআই দুলাল ও মনিরকেও বলেছি। তারা আমাকে বলেছে- আমার মেয়ে নাকি প্রেম করে। রুবেল নাকি ভাল ছেলে। ছোট বাচ্চা কিসের প্রেম করে? আমার জ্বলজ্যান্ত বাচ্চাকে খুন করেছে। আমি মা ডাক শুনিনি আটদিন।’
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের বিশেষ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, ডোবা থেকে বস্তাবন্দী শিশু আবিদা সুলতানা আয়নীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণের পরে রুবেল আবিদাকে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে ।’