আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: সুদ কারবারীর কাছ থেকে নিয়েছিলেন এক লাখ টাকা। এ পর্যন্ত দিয়েছেন ৫ লাখ টাকা। তারপরও সুদের টাকা শোধ হয়নি। এরপর নিজের কাছে রাখা ব্ল্যাঙ্ক চেকে ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে মামলা করে এক সুদখোর ব্যবসায়ী। সেই মামলায় ১০ মাস ধরে জেল খাটছেন এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের কাকুড়িয়াডাংগা গ্রামে।
গ্রামবাসি জানায়, অভাব অনটনের সংসার হলেও দুই ছেলে মেয়ে, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে সুখের সংসার ছিল কাকুড়িয়াডাংগা গ্রামের আলউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে শহিদুল। ব্যবসা বড় করার জন্য শহিদুল স্থানীয় সুদখোর ওলিয়ার রহমানের কাছ থেকে ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়ে এক লাখ টাকা নেন। সুদাসলসহ এ পর্যন্ত শহিদুল পরিশোধ করেছেন ৫ লাখ টাকা। কিন্তু খাতায় তার জের থেকেই যায়। এদিকে টাকা দিতে দিতে চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকা সুদের টাকা বকেয়া পড়ে যায়। সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় সুদখোর ওলিয়ার সেই ব্ল্যাঙ্ক চেকে ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে ঠুকে দেয় মামলা। সেই মামলায় এখন তিনি জেলের ঘানি টানছেন।
সুদখোর ওলিয়ার রহমান শৈলকুপা উপজেলার পাচপাখিয়া গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। ব্যবসায়ী শহিদুল জেলে থাকায় তার কলেজ পড়ুয়া দুই ছেলে মেয়ে বাড়ি ছেড়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছে। সুদখোরের কাছ থেকে টাকা নিয়ে একটি পরিবার ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। এদিকে ওলিউর রহমান দাবি করছেন তার কাছে সুদে টাকা নয়, জমি বিক্রির টাকা নিয়ে অন্য লোকের কাছে বিক্রি করেছে শহিদুল। এ জন্য তিনি মামলা করেছেন।
কারাগারে থাকা শহিদুলের স্ত্রী সীমা ইসলাম জানান, “পাচপাখিয়া গ্রামের ওলিয়ারের কাছ থেকে দুই বছর আগে আমার স্বামী দুটি ফাঁকা চেক দিয়ে এক লাখ টাকা নেন। পরবর্তীতে আসল টাকাসহ লভ্যাংশের ৫ লক্ষ টাকা পরিশোধও করেন। কিছুদিন পর ওলিয়ার আরো ৫ লাখ টাকা দাবী করেন। আমার স্বামী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ফাঁকা চেকের উপর ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে ঝিনাইদহের আদালতে চেকের মামলা করেন। আদালতের আদেশে আমার স্বামীকে গ্রেফতার করে ১০ মাস আটকে রাখা হয়েছে”।
সীমা ইসলাম অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময় সুদখোর ওলিয়ার হুমকি দিচ্ছেন। ফলে আমিসহ আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ভয়ে আমার কলেজ পড়–য়া ছেলে মেয়ে অন্যের বাড়িতে আছে। বি
ষয়টি নিয়ে ওলিউর রহমান বলেন, আমার কাছে সে জমি বিক্রি করার জন্য টাকা নিয়েছিল। এখন সে জমি না দিয়ে তালবাহানা শুরু করেছে। আমি কোন সুদে কারবারী না। এলাকায় আমি একজন সৎ মানুষ, আমি এ বছর হজে¦ যাব।
এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, এব্যাপারে আমার কাছে একটা অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।