মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের উখিয়া বালুখালীতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ানকে প্রধান করে কমিটিটি গঠন করা হয়।
কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান জানান, তাকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তা, ফায়ার সার্ভিস, এপিবিএন, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা সদস্য রয়েছেন।
সোমবার (৬ মার্চ) সকাল থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছে। আগামী ৩ দিনের মধ্যে কারণ বের করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ক্যাম্পের অগ্নিকাণ্ডে দুই হাজার ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ১২ হাজার রোহিঙ্গা ঘর হারায়। সোমবার সকাল থেকে তাদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম আশ্রয়হীন রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী ঘর তৈরি করবে। জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা ডাব্লিউএফপি রোহিঙ্গাদের জরুরি খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে।
তিনি জানান, অগ্নিকাণ্ডে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হচ্ছে। নিখোঁজ কিংবা হতাহতের কোনো ঘটনা নেই।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের এক তথ্য বলছে, আগুনের ঘটনাস্থলে ৫টি মেডিকেল টিম রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। যেখানে ৯০ জন কমিউনিটি হেলথ কর্মী কাজ করছেন।
এদিকে, সোমবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ, এপিবিএনসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। এর মধ্যে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা বলে দাবি করছেন সাধারণ রোহিঙ্গারা। ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়ার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হয়েছে।
তদন্ত কমিটি অনুসন্ধানের পর তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারস্থ অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা।
তিনি বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় ২ হাজারের মতো ঘর পুড়েছে। যেখানে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১২ হাজার রোহিঙ্গা। পুড়ে যাওয়ার মধ্যে ৩৫টি মসজিদ-মক্তব, ২টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, হেল্প পোস্ট একটি, যুব কেন্দ্র, নারীবান্ধব কেন্দ্র একটি, শিক্ষাকেন্দ্র একটি, শিশুবান্ধব কেন্দ্র একটি, মানসিক পরিচর্যা কেন্দ্র একটি পুড়ে গেছে।
এ পর্যন্ত হতাহতের কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
রবিবার বিকাল ৩টায় বালুখালীর ১১ নম্বর ক্যাম্প থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এর আগে ২০২১ সালের ২২ মার্চ একই ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনে ১১ জনের মৃত্যু, ৫ শতাধিক আহত হয়। পুড়ে যায় ৯ হাজারের বেশি ঘর।