আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশে দেশে খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের হানা। এদের জোড়া ধাক্কায় বিশ্বব্যাপী খাদ্যমূল্য আকাশচুম্বী হয়েছে, দেখা দিয়েছে খাদ্য ঘাটতি। নতুন বছরেও এই পরিস্থিতিতে বড় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা কম।
দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩ সালেও চোখ রাঙাবে ইউক্রেন যুদ্ধ ও জলবায়ু পরিবর্তন। তার কারণে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে পকেট বাঁচাতে বিকল্প খাবারে ঝুঁকবে মানুষ। গমের পরিবর্তে বাজরা, সূর্যমুখীর পরিবর্তে উদ্ভিজ্জ তেল ব্যবহারে ঝুঁকবেন বহু মানুষ।
জাতিংসংঘের ধারণা, নতুন বছরে বিশ্বব্যাপী অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা আরও ১ কোটি ৯০ লাখ বাড়তে পারে। ক্ষুধার্ত থাকতে পারে প্রায় ৮৩ কোটি মানুষ।
বিভিন্ন জায়গায় কমবে ফসল উৎপাদন। রাশিয়া থেকে সার সরবরাহে ঘাটতি, জ্বালানির উচ্চমূল্য এবং ২০২২ সালের তীব্র খরা পরবর্তী প্রভাবের কারণে চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
গম-ভূট্টার মতো ফসল উৎপাদন কমতে পারে। তবে বাড়বে ধান উৎপাদন। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানির পরিমাণ কমই থাকবে। এতে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মিসর।
তবে আশার কথা, এত কিছুর পরেও আকাশছোঁয়া খাদ্যমূল্য কিছুটা নিচে নামবে। এর পেছনে বড় অবদান অবশ্য চাহিদা কমে যাওয়ার। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) পূর্বাভাস বলছে, ২০২৩ সালে খাদ্য, পানীয় ও পশুখাদ্যের দাম ১২ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। সবচেয়ে বেশি কমবে তেলবীজের দাম।
তারপরও পকেট বাঁচাতে মুখের স্বাদ বদলাবেন বহু মানুষ। গমের পরিবর্তে বাজরা, সূর্যমুখীর পরিবর্তে উদ্ভিজ্জ তেল ব্যবহারে ঝুঁকবেন তারা।
খাদ্য সরবরাহ ঝুঁকির মুখে পড়লে বিভিন্ন দেশ নতুন করে খাদ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। এর ফলে দামও ফের বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
‘টেকসই’ চাষবাদ বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নতুন কৃষিনীতিতে জোর দেবে। জমিকে পতিত ছেড়ে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে তারা আরও বেশি খাদ্য উৎপাদনে ঝুঁকবে।
নতুন বছরে নজর থাকবে গবেষণাগারে উৎপাদিত খাদ্যপণ্যেও। এ পদ্ধতিতে শিওক মিটসের উৎপাদিত চিংড়ির হাত ধরে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে সিঙ্গাপুর। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হংকংয়ের অল্ট ফার্ম গবেষণাগারে কোষ-ভিত্তিক পশুর মাংস উৎপাদন করবে। শহরটিতে মুরগির মাংস উৎপাদনে কারখানা খুলবে মার্কিন কোম্পানি ইট জাস্ট।