ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন অবৈধ পথে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নেতিবাচক দিকসমূহ তুলে ধরে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের জন্য প্রবাসীদের মাঝে জনমত গড়ে তোলার আহবান জানান।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময়কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাষা সংগ্রাম ও স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। তিনি এবারের যুক্তরাষ্ট্র সফরের ফলাফল সম্পর্কে সকলকে অবহিত করেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রায় সকল সূচকে অভুতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এই সফলতা ও অগ্রযাত্রাকে মূলধারার সাথে বেশী বেশী সম্পৃক্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে তুলে ধরে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি বৃদ্ধির জন্য সকলকে আহবান জানান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে দেশ ও সরকার বিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে সেগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানান। অবৈধ পথে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নেতিবাচক দিকসমূহ তুলে ধরে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের জন্য প্রবাসীদের মাঝে জনমত গড়ে তোলার আহবান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি কোভিড-১৯ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য যে যার অবস্থান থেকে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান। প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি উপস্থিত সকলের প্রশ্নের জবাব দেন। উপস্থিত অনেকেই তাদের বক্তব্যে কনস্যুলেটের সার্বিক সেবা কার্যক্রমের উপর সন্তোষ প্রকাশ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে উল্লেখ করে তিনি প্রবাসীদের প্রত্যেককেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে অভিহিত করে দেশের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে সকলের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি সরকারের প্রবাসী বান্ধব নীতি অনুসারে প্রবাসীদের আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলকরণে প্রবাসীদের অবিরাম প্রচেষ্টা ও সাফল্য তুলে ধরেন এবং রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি প্রানবন্ত হয়ে উঠে। এ ধরণের একটি আয়োজনের জন্য উপস্থিত সকলে কনস্যুলেটকে বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বীর মু্ক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, রেমিট্যান্স হাউসের প্রতিনিধি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গসহ বাংলাদেশি কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মতিবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন:
আবারও বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সমর্থনের কথা জানালেন আন্তোনিও গুতেরেস