September 20, 2024 - 5:39 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeকর্পোরেট ভয়েসসিদ্দিকুর রহমান, সভাপতি, বিজিএমইএ

সিদ্দিকুর রহমান, সভাপতি, বিজিএমইএ

spot_img

মজুরি বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে আশুলিয়ার পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে ৫৯ কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে মালিকপক্ষ। শ্রমিকনেতারা আন্দোলনকে যৌক্তিক দাবি করলেও মালিকপক্ষ তা মানতে রাজি নয়। শ্রম আন্দোলন দমাতে চলছে মামলা ও গ্রেপ্তার। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ।

প্রশ্ন: শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিকে আপনারা কেন অযৌক্তিক বলছেন?

সিদ্দিকুর রহমান: শ্রমিকদের এবারের মজুরি বৃদ্ধির দাবিটা অযৌক্তিক। কারণ, ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৩ সালে তিনবার তিনটি দুর্ঘটনা ও কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকেরা সরকারের কাছে মজুরি বৃদ্ধির দাবি করেছিলেন। সে জন্য গতবারের মজুরি বোর্ডে এই জিনিসটা কীভাবে এড়ানো যায়, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়। মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি এবং নিরপেক্ষ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয়, শ্রমিকদের মূল মজুরির ৫ শতাংশ প্রতিবছর বাড়বে। এই ইনক্রিমেন্ট বাধ্যতামূলক করা হয়। আমরা মালিকেরা ​এই ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছি। মূল্যস্ফীতি কিন্তু ৫ শতাংশের নিচে আছে। তাহলে প্রবলেমটা কোথায়? শ্রমিকেরা বলেছিলেন, বছর বছর বাড়ির মালিকেরা বাড়িভাড়া বাড়িয়ে দেন। স্থানীয় সাংসদ বাড়ির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। শ্রমিকদের তিনি আশ্বস্ত করেছেন, আগামী তিন বছর বাড়িভাড়া বাড়বে না। তারপরও যদি মজুরি বাড়াতে হয়, তাহলে সরকারের কাছে দাবি জানাতে পারেন শ্রমিকেরা। কোনো আবেদন  নেই, কিছু নেই, একটি কারখানার ছোট ঘটনা নিয়ে আস্তে আস্তে সবখানে আন্দোলন ছড়িয়ে গেছে। এটা কোনোভাবেই শ্রমিকদের জন্য মঙ্গলজনক নয়। আমাদের জন্যও মঙ্গলজনক নয়। দেশের জন্যও নয়। দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে এসব অসুস্থ কাজকর্ম বন্ধ করা উচিত।

প্রশ্ন: শ্রমিকদের কারখানাভিত্তিক ছোটখাটো দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়ার কারণেই আন্দোলন বড় হয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির দাবি জোরালোভাবে উঠেছে। মালিকেরা শ্রমিকদের ছোটখাটো দাবি কেন পূরণ করেন না?

সিদ্দিকুর রহমান: কারখানার মালিকেরা চেষ্টা করেছিলেন। শ্রমিকদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে সমাধান করতে চেয়েছিলেন মালিকেরা। তবে শ্রমিকেরা যে এমনটা করবেন, তা কোনো কারখানার মালিকই কল্পনা করেননি। আসলে কিছু লোক, স্বার্থান্বেষী মহল শ্রমিকদের উসকে দিয়ে এই অবস্থা তৈরি করেছে।

প্রশ্ন: তাহলে উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের মজুরি না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে কেন?

সিদ্দিকুর রহমান: উসকানিদাতাদের ধরার দায়িত্ব সরকারের। সরকার কাজ করছে। সবকিছু বেরিয়ে আসবে। কোনো সাধারণ শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আর শ্রম আইন অনুযায়ীই মালিকেরা কারখানা বন্ধ করেছেন।

প্রশ্ন: আশুলিয়ার যে এলাকায় এবার শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে, সেখানেই বারবার শ্রম আন্দোলন হয়। বিজিএমইএর বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন নেতার কারখানা আছে এই এলাকায়। শ্রম অসন্তোষের এটিই কি বড় কারণ?

সিদ্দিকুর রহমান: আমি এমনটা মনে করি না। এই এলাকায় কতগুলো নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন আছে। এসব তথাকথিত ইউনিয়নের নেতারা যাওয়া-আসা করেন। কারখানাগুলোতে তাঁদের কিছু লোকজন আছেন। নিয়মিত বৈঠক করেন। তা ছাড়া, এলাকাটি ঢাকার খুব কাছে। আসা-যাওয়া সহজ। আবার একই এলাকায় অনেক শ্রমিক থাকেন, সে জন্য অনেকেরই নজর আছে।

প্রশ্ন: সমস্যা সমাধানে বিজিএমইএ কোনো উদ্যোগ নেবে?

সিদ্দিকুর রহমান: আমাদের শ্রমিকেরা খুবই সাধারণ। নিরীহ। তাঁরা সব সময়ই এসবের ঝামেলা থেকে দূরে থাকেন। মুষ্টিমেয় লোকের প্ররোচনায় পড়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে এ ধরনের সংকটের কারণে পোশাক রপ্তানির ব্যবসা অন্য দেশে চলে গেলে শ্রমিকেরাই কিন্তু বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ, ৪০ লাখ পোশাকশ্রমিকের বিপরীতে কারখানামালিকের সংখ্যা মাত্র কয়েক হাজার। শ্রমিকেরা যদি ঠিকমতো কাজে যোগ দিতে চান তাহলে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব, কারখানা খুলে দেব কি না।

সৌজন্যে: প্রথম আলো।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ