কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে যে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি হয়েছিল তা নিয়ে দেশটিতে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। মূলত পাকিস্তানের কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ বিষয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। গত ২৬ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (পূর্বের টুইটার) একটি ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন, কে প্রকৃত বিশ্বাসঘাতক, জেনারেল ইয়াহিয়া খান নাকি শেখ মুজিবুর রহমান- তা জানতে প্রত্যেক পাকিস্তানির হামুদুর রহমান কমিশনের প্রতিবেদন পড়া উচিত।
ইমরান খানের অফিশিয়াল এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা ওই ভিডিওতে মূলত উল্লেখ করা হয়, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশ তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ‘অপারেশন সার্চলাইটে’ কী ধরনের নৃশংসতা চালিয়েছে। একই সঙ্গে এও বলা হয় যে, পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ শেখ মুজিবকে তাদের নেতা হিসেবে বেছে নিয়েছিল, এটাই কী ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের অপরাধ?
হামুদুর রহমান কমিশনের বরাত দিয়ে ভিডিওতে আরও উল্লেখ করা হয়- শেখ মুজিব নন, পাকিস্তান ভাঙার জন্য দায়ী দেশটির তৎকালীন জেনারেলরাই। এবং শেখ মুজিব গাদ্দার নন, গাদ্দার কারা তা জেনে নেওয়ার জন্য প্রত্যেক পাকিস্তানির উচিত হামুদুর রহমান কমিশনের প্রতিবেদন ভালোভাবে পাঠ তথা অধ্যয়ন করা।
এদিকে, ইমরান খানের আইডি থেকে শেয়ার করা এই ভিডিও টুইটটি এক দিন পর তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এক্স অ্যাকাউন্ট থেকেও শেয়ার করা হয়। তার পরপরই পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি পিটিআইকে একটি আইনি নোটিশ পাঠায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে। এমনকি এই টুইট শেয়ার করায় ইমরান খানকে আদিয়ালা কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
ইমরান খান গত এক বছর ধরে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দি রয়েছেন। তিনি বেশ কয়েকটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং তার বিরুদ্ধে আরও মামলা বিচারাধীন রয়েছে। জেলে থাকার কারণে ইমরান খান নিজে তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন না। এক্ষেত্রে পিটিআই বলে থাকে যে পিটিআই-র সোশ্যাল মিডিয়া টিমের সদস্যরাই দলের চেয়ারম্যান ইমরান খানের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো পরিচালনা করেন।
এখন, ইমরান খান ও পিটিআই-র অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টগুলো থেকে ‘হামুদুর রহমান কমিশন রিপোর্ট’ বিষয়ক যেসব টুইট করা হয়েছে, সেগুলোকে ‘সেনাবাহিনীর জন্য মানহানিকর’ এবং একই সাথে ‘উস্কানিমূলক’ বলে মন্তব্য করেছেন সমালোচকরা।
পিটিআইয়ের বর্তমান চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহার আলী খান, মহাসচিব ওমর আইয়ুব এবং মুখপাত্র রওফ হাসানের কাছে পাঠানো নোটিশে বলা হয়, ইমরান খানের ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টের ‘অপব্যবহার’ সম্পর্কে একটি তদন্ত শুরু হয়েছে। কারণ সেই অ্যাকাউন্ট থেকে ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অত্যন্ত আপত্তিকর এবং উসকানিমূলক বিষয়বস্তু’ শেয়ার করা হয়েছে। সূত্র: দ্য ডন