আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় তীব্র গরমে অন্তত ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে দেশটির ওড়িশা রাজ্যে। সেখানে সর্বোচ্চ ৪৬ জন মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান এবং উত্তর প্রদেশে এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
কর্মকর্তাদের মতে, শুক্রবার সুন্দরগড়, সম্বলপুর এবং বোলাঙ্গির জেলার রাউরকেলা শহরে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ৪১ জনের মৃত্যু হয়। শুধুমাত্র রাউরকেলা সরকারি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে অন্তত আটজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয় জনস্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক নীলকান্ত মিশ্র জানান, যদিও মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্ত পরীক্ষার পরেই নিশ্চিত হওয়া যাবে, তবে প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে যে মৃত ব্যক্তিদের অধিকাংশই তীব্র তাপের সময় বাইরে কাজ করছিলেন। ‘সন্দেহজনক হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া লোকদের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে’ বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
এদিকে, শুক্রবার রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) তথ্য অনুযায়ী, কয়েকটি উপকূলীয় অঞ্চলে আর্দ্রতার মাত্রা ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
আবহাওয়া সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৩ জুন পর্যন্ত তাপপ্রবাহের এই অবস্থা অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে অবিভক্ত সম্বলপুর, সুন্দরগড়, বোলাঙ্গির, কালাহান্ডি এবং বৌধ জেলায় বসবাসকারীদের পিক আওয়ারে বাড়ির ভেতরে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তবে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতেও গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, বিহারে পোলিং কর্মীসহ অন্তত ১৬ জন মারা গেছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের বেশিরভাগই ভোজপুর, রোহতাস, কাইমুর এবং ঔরঙ্গাবাদের বাসিন্দা। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে যাওয়ায় সেখানে প্রচণ্ড গরমে ভুগছে মানুষ। শুক্রবার ঔরঙ্গাবাদে তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। ফলে তাপপ্রবাহের কারণে সব স্কুল, কোচিং ইনস্টিটিউট আগামী ৮ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ ছাড়াও ঝাড়খণ্ডে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। তাদের মধ্যে পালামুতে তিনজন এবং জামশেদপুরে একজন মারা যান। তবে এ চারজন হাসপাতালে মারা যাননি বলে ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের (ঝাড়খণ্ড) পরিচালক ডা. অলোক ত্রিবেদী।
অন্যদিকে, শুক্রবার রাজস্থানেও চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আর উত্তর প্রদেশে অন্তত ১৫ জন পোলিং কর্মী মারা গেছেন, যেখানে লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোটগ্রহণ চলছিল। এদের মধ্যে রাজ্যের সোনভদ্র জেলায় নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা দুইজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চন্দ্র বিজয় সিং। যদিও মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে বিজয় সিং বলেন, মৃতদের লক্ষণগুলো হিট স্ট্রোকের মতো বলে মনে হয়েছিল। সূত্র- হিন্দুস্থান টাইমস।