আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে বড় ধরনের হামলা পরিচালনা করলে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবারহ বন্ধ করবে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (8 মে) প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। খবর রয়টার্সের
এই সতর্কবার্তা এমন সময় এলো যখন গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি পরিকল্পনা নিয়ে কায়রোতে চলমান আলোচনা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অব্যাহত রাখা হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছিলেন, ‘আমি স্পষ্ট বলে দিয়েছি, যদি তারা রাফাহতে হামলা চালায়…তবে আমি অস্ত্র সরবরাহ করছি না।’
বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে রাফাহ শহরে হামলার পরিকল্পনা বাতিলের জন্য ইসরায়েলকে বারবার চাপ দিয়ে আসছে বাইডেন প্রশাসন। ওই সাক্ষাৎকারে বাইডেন স্বীকার করেছেন, হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্যে গাজায় টানা সাত মাস ধরে চলা যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য ইসরায়েলকে দেওয়া মার্কিন বোমাগুলো বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে।
রয়টার্স বলছে, বাইডেনের এমন মন্তব্যের বিষয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে রাফাহতে ইসরায়েলের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার দাবি, সেখানে হাজার হাজার হামাস যোদ্ধা রয়েছে। তাদের পরাজিত করতে রাফাহ শহরে অবশ্যই আঘাত করতে হবে।
এদিকে, দক্ষিণ গাজায় মঙ্গলবার ট্যাঙ্ক এবং বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মিসরের সঙ্গে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে ত্রাণ প্রবেশকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ পথও বন্ধ করে দিয়েছে তারা।
ইসরায়েলকে রাফাহ শহরে হামলা চালানো থেকে বিরত রাখতে ডেমোক্র্যাটদের চাপের মধ্যে রয়েছেন বাইডেন। এছাড়া, দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসের ক্রমবর্ধমান ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ বাইডেনের জন্য এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া আরও কঠিন করে তুলেছে। ইসরায়েলের প্রতি বাইডেনের সমর্থন এখন একটি রাজনৈতিক দায় হয়ে ঠেকেছে। কেননা, আসন্ন নির্বাচনে পুনরায় প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন বাইডেন।
এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্র। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর এই সরবরাহ আরও ত্বরান্বিত করেছে দেশটি। তবে বুধবার মার্কিন কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকি ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ইসরায়েলে বোমার চালান সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সিদ্ধান্তকে ‘খুবই হতাশাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান। তবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করবে—এমন কথা বিশ্বাস করেন না তিনি।