মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এতিমখানার নামে বরাদ্দ পেতে ঘুষ দাবি এবং কর্মকর্তার পক্ষে অফিস সহকারীর গুনে গুনে ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও ফাঁস হয়। ওই ঘটনায় ২৮ এপ্রিল চ্যানেল ২৪ এর বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও প্রিন্ট পত্রিকায়‘কর্মকর্তার ঘুষের টাকা গুনে গুনে নেন অফিস সহকারী’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। একই সাথে ঘুষ চাওয়া এবং ঘুষের টানা গুনে নেওয়ার ভিডিও প্রচার করা হয়। সংবাদ প্রকাশের পর ২৯ এপ্রিল তাদের দুইজনকেই বরখাস্ত করা হয়।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের যুগ্মসচিব (পরিচালক প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ মো. নুরুল বাসির এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম সেখ স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদন ও ভিডিও প্রকাশের পর মামতাজ বেগম এবং আমজাদ হোসনের ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। যা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরে এলে, শৃঙ্খলা রক্ষায় অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জানা গেছে, কক্সবাজারের চকরিয়া হারবাং মধ্যম পহরচাঁদা এতিমখানার অনুদানের ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা পেতে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. আমজাদ হোসেন ও অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম এতিমখানার সভাপতি রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। প্রথম কিস্তির টাকা উত্তোলনের পর মমতাজ বেগমকে নগদ ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দেওয়া হয়। যার ভিডিও চিত্রসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রচারের পর ভাইরাল হয়ে পড়লে সমালোচনার মুখে দুর্নীতিগ্রস্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তি ভাতা বই নিতে গেলেও প্রতিজন উপকারভোগীর কাছ থেকে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করতেন আমজাদ হোসেন ও মমতাজ বেগম।
এতিমখানার সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, যেখানে এতিমখানা তাদের হাত থেকে রক্ষা পায় না সেখানে সাধারণ মানুষ কি পরিমাণ ভুক্তভোগী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এতদিন পর হলেও দুর্নীতিগ্রস্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় আমি খুশি। এখান থেকে অনেকে শিক্ষা নিতে পারেন।
বরখাস্তের বিষয়ে জানতে চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মমতাজ বেগম ও চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. আমজাদ হোসেনকে ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।