মোঃ বাদল হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীদের নতুন কমিটিতে আলোচনায় থাকা দুই ছাত্রলীগ নেতার মাদক সেবন ও চাঁদা দাবির ভিডিও ভাইরাল। নরসিংদীর উৎপল দাস নামের একজন সাংবাদিকের ফেসবুক আইডি থেকে মোট তিনটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়।
এতে দেখা গেছে ছাত্রলীগ নেতা রাইসুল ইসলাম শিবলু ও মোঃ বাইজিদ সহ সাথে বেশ কয়েকজনকে গাঁজা ও মদ্য পানের করতে। এবং একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষে গিয়ে চাঁদা আদায়ের দাবি করছে তারা। এসময় মনির নামের এক হোটেল ব্যবসায়ীকে চাঁদা দিতে চাপ প্রয়োগ সহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে দেখা গেছে। আলাদা তিনটি ভিডিও ক্লিপস ভাইরাল হওয়ার পর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ সচেতন মহলের মধ্যে এক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঐ ভিডিও ক্লিপস প্রকাশের হতেই তাদের অনুসারীরা কুয়াকাটা-পটুয়াখালী মহাসড়কে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করেন।
অন্যদিকে রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাত ৮টায় এসব ভিডিও ক্লিপস বানোয়াট ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে রাইসুল ও বাইজিদ স্বাক্ষরিত কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
আলোচিত ঐ ভিডিও ক্লিপসে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদক বরাবর তদন্তের আহবান জানিয়ে পোস্টে লেখা হয় যে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান মহিব ভাইয়ের কথিত পরিচয় দেয়া নাতি রাইসুল ইসলাম শিবলু এবং বায়জিদ কুয়াকাটা পৌরসভা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতা হওয়ার জন্য দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হোটেলে চাঁদাবাজি, অনৈতিক দেহ ব্যবসা ও মাদক ব্যবসা নিয়মিত করে যাচ্ছে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। পাশাপাশি তারা নিজেরাও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। এমন কাউকে নেতা বানানোর আগে অবশ্যই জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন ও শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বিষয়টা আরো তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।
তবে ভিডিও ক্লিপসে গাঁজা ও মদ্য পানের একাধিক চিত্র দেখা গেলেও অভিযুক্তরা বলছেন এসব আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) দ্বারা তৈরী। এছাড়াও একটি ভিডিওতে তাদের সাথে থাকা একজনকে বলতে শোনা গেছে যে, “বাইজিদ ভাই আর শিবলু ভাই যদি নেতা হননা, এই শহরে ব্যবসা (মাদক) চালামু আমরা।” অন্যদিকে কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেলে কর্মরত মনির নামের ঐ ব্যক্তিকে অনৈতিক দেহ ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য প্রথমে ৫০ হাজার টাকা, পরে ২০ হাজার টাকা দেন দরবার করছে। তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবী রাইসুল ইসলাম শিবলু ও বাইজিদের। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে এদের দু’জনই কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নেতৃত্বে আসার আলোচনায় রয়েছে।
তবে অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে সভাপতি পদে আগ্রহী রাসেল মোল্লা নামের এক ছাত্রলীগ নেতার কিছু আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর পরের দিনই রাইসুল ও বাইজিদের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে করছে তারা।
ছাত্রলীগ নেতা রাইসুল ইসলাম শিবলু ও মোঃ বায়জিদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দেহ ব্যবসা ও মাদক ব্যবসার বিষয় যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আমরা সত্যি বিস্মিত”। এগুলি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) দ্বারা মিথ্যা বানোয়াট ভিডিও তৈরী করা হয়েছে যা কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগ কে হেয় প্রতিপন্ন করতে একটি কুচক্রী মহল এমন কাজ করেছে। আরো বলেন, উক্ত ঘটনার সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করলেই আসল ঘটনা বের হবে। এবং ষড়যন্ত্রকারীদের পরিচয় আরও স্পষ্ট হবে বলে আমরা মনে করি।